প্রচ্ছদ / জেলার খবর / বিস্তারিত

তুষারের মরদেহ আসতেই কফিন জড়িয়ে ধরলেন মা

   
প্রকাশিত: ১২:০০ পূর্বাহ্ণ, ১২ জানুয়ারি ২০২৩

ছবি: সংগৃহীত

কাতারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ৯ দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেজুয়ানুল হক তুষারের (২৫) মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের বোডিং মাঠ এলাকায় নিজ বাড়িতে তুষারের মরদেহ এসে পৌঁছায়। নিহত তুষার ওই এলাকার মৃত হামিদুল হকের ছেলে।

বাড়িতে তুষারের মরদেহ এসে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। অ্যাম্বুলেন্স থেকে কফিন নামানোর পরেই মা আখিনূর আক্তার রেখা সন্তানের মরদেহের কফিন জড়িয়ে ধরেন। একমাত্র বোন জুঁই তার ভাইয়ের মরদেহের উপর কান্নায় লুটিয়ে পড়েন। এসময় পুরো বাড়ি জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।

পরে ট্যাংকের পাড় মাঠে বাদ আসর তুষারের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে শহরের শেরপুর মীর শাহাবুদ্দিন (রঃ) মাজার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পরিবারের সদস্যরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের মৃত হামিদুল হকের একমাত্র ছেলে রেজুয়ানুল হক তুষার। বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের হাল ধরতে কাতারে পাড়ি দেন তুষার। গত সোমবার (২ জানুয়ারি) কাতারের ছালোয়া রোডে ট্রাক চাপায় মারা যায় তুষার।

তুষারের ভগ্নিপতি শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া রাকিব জানান, বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর পরিবারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে তুষার কাতার প্রবাসে পাড়ি দেয়। সে কাতারে একটি প্রতিষ্ঠানে ফুড ডেলিভারির কাজ করতো। সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে মোটরসাইকেলে খাবার ডেলিভারি দিতে যাওয়ার সময় পেছন থেকে একটি ট্রাক তুষারকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তুষার নিহত হন।

রাকিব আরও জানান, প্রবাসে যাওয়ার পর গত ৭ বছরে একবারও দেশে আসেনি। গত ৬ মাস আগে মোবাইলে পারিবারিক ভাবে জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়ায় বিয়ে করেন তুষার। কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে নববধূকে ঘরে তুলার কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস দেশে ফেরা হয়নি তুষারের, নববধূকেও ঘরে তোলা হয়নি।

তিনি আরও জানান, তুষারের মা প্রতিক্ষায় ছিলেন ছেলে দেশে ফিরে আসবে। ধুমধামে ছেলের বিয়ের আয়োজন করে পুত্রবধূকে ঘরে তুলে আনবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি তুষারের মায়ের।

ইমদাদ/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: