দলনেতার 'কথা না শোনায়’ স্মৃতিসৌধে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করা হয় শিশুকে

প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:০১ পিএম

ঢাকার সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিতরে 'কথা না শোনায়’ লেকের পানিতে চুবিয়ে ৭ বছরের এক পথশিশুকে ১৩ বছর বয়সী আরেক কিশোর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির মরদেহ উদ্ধার ও ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত কিশোর।

রবিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানা উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায়। এরআগে শনিবার সন্ধ্যার দিকে সাভারের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নিহত ওই শিশুর নাম নীরব। তবে ছিন্নমূল হওয়ায় তাঁর বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ জানায়, স্মৃতিসৌধের ৪-৫ জন পথশিশু আছে, যারা ফুল বিক্রি করে বা ভিক্ষা করে। ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোর তাঁদের দলনেতা। বাকিদের কাছ থেকে টাকা নিত সে। তার কথা না মানায় নীরবকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হলে তাকে আটক করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে।

এব্যাপারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, স্মৃতিসৌধের পেছন দিকের লেকের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পাই। ওইদিকে তেমন একটা দর্শনার্থী যায় না। পরে শিশুটিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শিশুটির সঙ্গে গোসল করতে নামা এক কিশোরের বক্তব্য রহস্যজনক হওয়ায় তাঁকে পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছিল। সে প্রথমে নিহত শিশুটিকে তার ছোট ভাই পরিচয় দেয়। তাঁর মা-বাবা কেউ নেই, থাকার জায়গা নাই এসব বিভ্রান্তিকর কথা বলে। পরে তার বাবা আসলে আমরা সত্যটা জানতে পারি।

মিজানুর রহমান আরও বলেন, শিশুটির মৃত্যুর পর লাশ কোলে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে দেয় কিশোরটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বিষয়টি স্মৃতিসৌধে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের জানায়। আনসার সদস্যরা গিয়ে তাকে আটক করে। এর আগে লেকে ওই শিশুকে মারার সময় অন্য পথশিশুরা প্রতিবাদ করলে তাদের মারধরের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় ওই কিশোর।

এবিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, স্মৃতিসৌধ থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িত এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটি ওই কিশোরের কথা না শোনায় সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম চলমান আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: