সাভারে কর্মরত সাংবাদিককে অপহরণ চেষ্টা, আটক ১

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:১৯ পিএম

ঢাকার সাভার উপজেলায় কর্মরত একটি বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক আশরাফ সিজেলকে মারধর ও অপহরণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মহসিন বাবু নামে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বিডি২৪লাইভ ডটকমের প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা।

রবিবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনায় সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবসহ ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মারধর, অপহরণসহ হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক আশরাফ সিজেল।

এরআগে শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে পৌরসভার ভাটপাড়া এলাকায় ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিকের ভাড়া বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক বেসরকারি টেলিভিশন ৭১ টিভির সাভার প্রতিনিধি। তিনি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি সাভারে বসবাস করেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও বাকি অভিযুক্তরা হলেন, রকিব আহম্মেদ, মহসিন বাবু ও মো. রওশনসহ অজ্ঞাত ৮-১০ জন। তারা সবাই সাভারের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

সাংবাদিক আশরাফ সিজেল বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের দুর্ভোগের সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি সেখানে যাই। ইউনিয়ন পরিষদ দুইতলা ভবন ১৯৮৫ সালে হয়েছে। কিন্তু এরপর আর সংস্কার হয়নি। ইউএনও ৫ মাস আগে চিঠি দিছে চেয়ারম্যানের কাছে যে, ঝুঁকিপূর্ণ এ পরিষদ ভবন পরিত্যক্ত করে অন্য জায়গায় ভাড়া নেয়ার জন্য। পরে এ বিষয়ে আমি ইউএনও ও চেয়ারম্যানের বক্তব্য নিছি। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে খাসজমি ইজারার নামে একটা প্রভাবশালী লুটপাট করে খাচ্ছে। এটার নিউজ আজকে প্রচারও হয়েছে।

এটা নিয়েই উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ। আজকে সারাদিন উপজেলা চেয়ারম্যান রাজীবের লোকজন আমাকে ফলো করছে। ওখান থেকে যখন আমার বাসা ভাটপাড়ার দিকে আমি আসছি। তখন মহসিন বাবু, ফেসবুক সাংবাদিক রওশন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা ৮-১০জন পিস্তল নিয়ে আমাকে অপহরণের চেষ্টা করছে। মারধরও করছে। আমি কোনো রকম আত্মরক্ষা করে কৌশলে দেয়াল টপকে পাশের একটা ভবনের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। পরে সন্ত্রাসীরা গেটের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি করছে খোলার জন্য। পরে ৯৯৯ এর কল পেয়ে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এমনকি সন্ত্রাসীরা পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি করে।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও’র চিঠিমতে, ইউনিয়ন পরিষদের ভাড়ার ব্যয়ভার বহন করবে উপজেলা পরিষদ। আবার আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের দখলের জায়গায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসও আছে। এ বিষয়েই উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ। আমি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকলেও শঙ্কিত। কারণ এখনও আমাকে ফোনে হুমকির মধ্যে রাখছে। আমাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমার বাড়িওয়ালাকেও হুমকি দিচ্ছে। মহসিন বাবু ও উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব বলেন, আমি তো এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তার সঙ্গে তো আমার ভালো সম্পর্ক। কেন যে হঠাৎ এমন করলো বুঝলাম না। এখন শুনি আমার নামেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি চাই যদি ওই সাংবাদিকের ওপর কেউ হামলা করে থাকে তাকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। একই সঙ্গে সে যে আমাকে জড়িয়েও মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে, সেটিও যেন তদন্ত করে অভিযোগ মিথ্যা হলে মিথ্যা অভিযোগের জন্যেও যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ভুক্তভোগী সাংবাদিকের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে বাবু নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: