প্রতারনার গডফাদার খ্যাত সাবু জেল হাজতে

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৪১ এএম

প্রতারনার গডফাদার খ্যাত এলজিইডির রোলার চালক প্রতারক শফিকুল ইসলাম (সাবু)কে অর্থ আত্নসাতের একটি মামলায় জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড়ের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর আগে একই বিচারক চলতি মাসের দুটি জামিন শুনানিতে তার জামিন বাতিল করেন। শফিকুল ইসলামের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার গোবিন্দা গ্রামে। সে ওই গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে।

মামলার বিবরন এবং বাদীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম সরকারী চাকুরি বিধির তোয়াক্কা না করে গত ২০১২ সালে সুবসতি নামে একটি সংস্থার জমি দেখাশুনার জন্য পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আসেন। সংস্থাটির সেই জমিগুলোতে কৃষি খামার এবং বাগান রয়েছে। তিন থেকে চার বছর পর সংস্থাটির জমি নিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। সেই সাথে সংস্থাটির কর্তাব্যাক্তিদের সাথে সাময়িক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সাবু। অপরদিকে সংস্থাটির জমিতে বাগানের ফলফলাদি হিসাব সহ জমির অবস্থা জানার জন্য সুবসতির পক্ষ থেকে সাবুর কাছে হিসেব চাওয়া হলে সাবু হিসেব দিতে ব্যার্থ হয়।

এদিকে সংস্থাটির কর্তাব্যাক্তিদের আস্থাভাজন পরিচিত হয় সাবু সেই সুবাদে সম্প্রতি সংস্থাটির প্রায় দশ একর জমি নিজে মালিক সেজে স্থানীয় অসাধু কিছু ব্যাক্তির কাছে চুক্তিপত্র করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে গত ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল সুবসতি সংস্থাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরুজ্জামান বাদী হয়ে সাবুকে প্রধান আসামী করে পঞ্চগড় আদালতে মামলা দায়ের করেন। দশদিন পর আদালত মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব র‌্যাব-১৩ কে দেয়। পরে চার মাস তদন্তের পর গত ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে র‌্যাব। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা প্রমান হলে প্রথমে ৩ নং আসামী আব্দুস সাত্তার পরে শফিকুল ইসলাম সাবু ও রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি হয়। পরে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারী সাবু ও তার দুই সহযোগী আদালতে আত্নসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালত প্রধান আসামী শফিকুল ইসলাম সাবুকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। বাকি দুই আসামির জামিন দেন আদালত।

মামলার বাদী সুরুজ্জামান জানায়, আমি খুব ভীত এবং আতঙ্কিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। আসামী শফিকুল ইসলাম জেল থেকে বের হলে আমার জীবন হুমকিতে পড়বে। এর আগে সাবু আমাকে প্রান-নাশের হুমকি দিয়েছিল। শফিকুল ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুবসতির নামে প্রতিষ্ঠানটির জমি জবর দখল করা। সরকারী চাকুরি বিধি কখনোই মানেনা। শুধু তাই নয় নিজে সংস্থার কমিটির নামে ভূয়া রেজুলেশন করে জমির মালিক সেজে রাজধানীর ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকির কাছে সাড়ে এগার একর জমি বিক্রয় করে দেন। এজন্য তার পিছনে বৃহৎ শক্তি হিসেবে কাজ করছেন সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকি। আমি সবচেয়ে বেশি অবাক হয়ে যাই শফিকুল ইসলামের এসব অন্যায় কাজের পরও এলজিইডি কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেনা?

বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় আসামীর বিরুদ্ধে ১৮ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা দেখে আদালত শফিকুল ইসলামের জামিন বাতিল করেছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: