কক্সবাজারে মার্কেট দখলে নিতে অস্ত্রের মহড়া, জনমনে আতঙ্ক

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম

কক্সবাজারে ভাড়াটে একদল দুর্বৃত্ত নারীকে দিয়ে একটি বার্মিজ মার্কেট দখল চেষ্টার ঘটনায় উত্তেজনা চলছে। ইতোমধ্যে একাধিকবার হামলার পর সশস্ত্র মহড়া চলায় আতংক বিরাজ করছে পর্যটন জোনে। দুর্বৃত্ত হামলার ভয়ে গেল কয়েকমাস ধরে মার্কেটটি খুলতে না পেরে ব্যবসায়ীদের অর্ধশত কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কেট মালিকরা। কক্সবাজার পৌরসভার পর্যটন জোন কলাতলীর টিএম বার্মিজ মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে।

মার্কেট মালিকদের অভিযোগ পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছড়া এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু, সরকারি খাস জমি দখলবাজ আব্দুল্লাহ এবং সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা অর্ধশতাধিক ভাড়াটে নারীদের ব্যবহার করে তাদের নির্মিত মার্কেটটি দখল করতে চান। থানা পুলিশের তৎপরতায় মার্কেটটি রক্ষা করতে পারলেও ভূমিদস্যুদের অব্যাহত হুমকিতে ব্যবসায়ী ও মার্কেট মালিকরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

মার্কেট মালিক আব্দু ছবুর জানান, বিএস ১৭৫১ খতিয়ানে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমিতে অনেক বছর ধরে মার্কেট নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন তারা। সম্প্রতি এটিকে পর্যটন শিল্প বান্ধব করতে সংস্কার করে ‘টিএম বার্মিজ মার্কেট’ হিসাবে গঠন করা হয়। এসময়-ই মার্কেটটি দখলে নিতে কয়েক দফা হামলার চেষ্টা চালিয়েছে ভূমিদস্যু আব্দুল্লাহ ও মুসা গং।

মার্কেট মালিকদের দেয়া তথ্য মতে, ভূমিদস্যুদের পক্ষে জনৈক আব্দুল করিম স্বত্ব দাবি করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা দায়ের করেন (নং-১৭৮৩/২২)। মামলাটি সরজমিন তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন সহকারী কমিশনারের পক্ষে তহসিলদার। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খরিজ করে দেন।

হোসনে আরা নামে আরেক মার্কেট মালিক জানান, ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা একটি এমআর মামলা দায়ের করি (নং-১৮৫৫/২২)। মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে ভূমিদস্যু মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা গংদের বিরুদ্ধে বারিত আদেশ প্রদান করেন আদালত। মার্কেটে ব্যবসায়ীরা যেন নিরাপদে ব্যবসা করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা দেয়া হয় আদেশে। আইনী লড়াইয়ে চূড়ান্তভাবে হেরে যাওয়ার পর আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ভূমিদস্যু আব্দুল্লাহ গং মার্কেট দখলের জোরচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জায়গা-জমির মালিকানা দলিলে প্রমাণের বিষয়। কিন্তু তারা জোর করে দখলে নিতে চান। দখলবাজি তাদের নেশা এবং পেশা। বর্তমানে হিলডাউন সার্কিট হাউস এবং কলাতলী আনবিক শক্তিকমিশন এলাকায় সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে রেখেছে আব্দুল্লাহ ও মুসারা।

দুর্বৃত্তদের অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে সোমবার ভুক্তভোগীরা এক সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

ব্যবসায়ী জেবর মল্লুক বলেন, মার্কেট খুলতে না পেরে আমাদের অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে অনেক পণ্যও। আমরা আশা করছি থানা প্রশাসন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করবেন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা হাতে পেয়েছি। ইতোমধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা চালানো বেশ কয়েকজনকে ঘটনাস্থল হতে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনো সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ পাচ্ছি। পর্যটন মৌসুমে শহরে কোন ধরণের বিশৃংখলা হতে দেয়া হবে না। সেখানে পুলিশের দৃষ্টি রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: