নেত্রকোনায় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের গাড়ির চাপায় নিহত ২, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪২ পিএম

নেত্রকোনায় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের গাড়ির চাপায় নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। তবে এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। জেলা ও উপজেলার খাদ্য বিভাগে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তাকে এ দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা নিরব থাকেন। এ বিষয়ে কোন জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান। তাদের দাবি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান অসুস্থ তাই তিনি ছুটিতে আছেন।

রোববার ও সোমবার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে অফিস সহকারী মোস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা সদর খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মোবাইলে জানান, খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান অসুস্থ তাই তিনি ছুটিতে আছেন। তবে পুরো বিষয়টি অবহিত করলে এক পর্যায়ে তিনি দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারি সরকারি গাড়ি নিয়ে গাজীপুরের একটি রিসোর্টে পিকনিকে যাচ্ছিলেন নেত্রকোনার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। পথে ত্রিশাল এলাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারের অপরপাশে গিয়ে একটি প্রাইভটেকারকে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভটেকারে থাকা চালক মো. শহিদ মিয়া ও গাড়ির মালিক মাহজাবিন আক্তার রুমপি গুরুতর আহত হন। এ সময় গাড়িতে থাকা রুমপির স্বামী আলী আজম ভুইয়া রোমানও সামান্য আহত হন। অপরদিকে খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুরও হাতে গুরুতর আঘাত পান। পরে চালক শহিদ মিয়া ও রুমপিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চালক শহিদ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমপিও মারা যান। এদিকে হাতে গুরুতর আঘাত পাওয়া খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতরা হলেন, প্রাইভেটকার চালক ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বিয়ারা গ্রামের মো. শহিদ মিয়া ও গাড়ির মালিক ময়মনসিংহ শহরের আকুয়া এলাকার মাহজাবিন আক্তার রুমপি (২৬)।

ত্রিশাল থানার ওসি মো. মইন উদ্দিন সোমবার জানান, শুক্রবার বিকেলে ত্রিশাল বাজারের কিছুটা সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের গাড়িটি ডিভাইডার পার হয়ে অপরপাশে থাকা একটি প্রাইভেটকারে ধাক্কা লাগে। এতে ওই প্রাইভেটকারে চালক শহিদ ও রুমপি গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চালক শহিদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তিন চারদিন পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রুমপি মারা যান। খাদ্য কর্মকর্তার গাড়িটি একজনের জিম্মায় ছেয়ে দেওয়া হয়েছে। আর প্রাইভেটকারটি এখনো থানায় রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

নিহত মাহজাবিন আক্তার রুমপি’র ভগ্নিপতি জুয়েল মিয়া জানান, চালক শহিদ ও রুমপি মারা গেছে ওই দুর্ঘটনায়। তবে এ বিষয়ে পরিবারের লোকজন একত্রিত হয়ে আলোচনা করছি কি করা যায়। আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: