বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে প্রথমবার ছয় কুমির ছানার জন্ম

প্রতিকী ছবি
গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে প্রথমবারের মতো কুমির ছানার জন্ম হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ছয়টি ছানার জন্ম হলেও পার্ক কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করে। ডিম থেকে ফুটার পরই ছানাগুলো পানিতে নেমে যায়।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, সাফারী পার্কে বর্তমানে ১০টি লোনা পানির কুমির ও ৬টি মিঠাপানির কুমির রয়েছে। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা। পার্ক প্রতিষ্ঠার পর বেশ কয়েকবার কুমির ডিম দিলেও তাতে ছানা ফুটেনি। তবে আশার আলো দেখা যায় গত ডিসেম্বরে। লোনাপানির একটি কুমির ডিমে তা দিলে তাতে ছয়টি ছানার জন্ম হয়। জন্মের পর ছানাগুলো কুমির বিষ্টনীর জলাধারে নেমে যায়।
বাংলাদেশে লোনাপানির কুমির এখন প্রায়ই দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশে দেখা যায়। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইইউসিএন) ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণীর তালিকা করে এ তালিকায় লোনাপানির কুমিরকে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এরা মাংসাশী শিকারি। এদের লেজ পেশীবহুল। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ কুমিরের দৈর্ঘ্য ৫-৭ মিটার, ওজন হয় ৪০০-১০০০ কেজি, স্ত্রী কুমির অনেক ছোট, দৈর্ঘ্য ৩মিটার। এদের চোঁয়াল মজবুত, প্রেভেটের ন্যায় দুর্দান্ত দাঁত থাকে। এদের সামনে পাঁচটি ও পেছনে ৫টি আঙ্গুল থাকে। চোখে নেত্রপল্লব থাকে। সাধারণত উপকূলীয় এলাকার অল্প লবণাক্ত পানি এবং নদী মোহনায় এদের বসবাস।
বাংলাদেশের সুন্দরবনের নদীগুলোর লোনাপানি এসব কুমিরের একমাত্র আবাসস্থল। এ জাতের কুমিরের জীবনকাল সাধারণত ২৫ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত হয়। তবে ১০০বছর বেঁচে থাকার রেকর্ডও এ কুমিরের রয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে মাছ, সাপ, বিভিন্ন উভচর প্রাণী, বানর, হরিণ, এমনকি মানুষও শিকার করতে পারে। সাধারণত ৮বছর বয়সে এ কুমির প্রজণননক্ষম হয়। তবে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে পুরুষ কুমিরের ১৬বছর এবং মেয়ে কুমিরের অন্তত ১২বছর লাগে।
একেকবারে একটি কুমির ৩০ থেকে ৪০টি ডিম দেয়। বাচ্চা ফুটে বের হতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে। বাচ্চা ফোঁটাতে নূন্যতম ৩০ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে বেশি তাপমাত্রায় পায় যে ডিম তা থেকে পুরুষ ছানার জন্ম হয় আর কম তাপমাত্রা পাওয়া ডিম থেতে মেয়ে কুমিরের জন্ম হয়। লোনা পানির কুমির মিঠাপানির কুমিরের চেয়ে হিংস্র হয়। বাংলাদেশের ২০১২সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে এ প্রজাতির কুমির সংরক্ষিত।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর পার্কের কুমির ব্যষ্টনীতে ছানার জন্ম হওয়ায় সত্যিই আনন্দের। এছানাগুলো জন্মের পর পরই পানিতে নেমে গেছে। জলাধার থেকেই সে তার খাবার গ্রহণ করছে। তবে ছানার জন্ম হলেও কতগুলো টিকে থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা প্রাপ্ত বয়স্ক কুমিরগুলোকে খাবার হিসেবে মুরগী দিয়ে থাকি। ছানাগুলোও জলাধার থেকে শেওলা ও ছোটমাছ খাবার হিসেবে গ্রহণ করছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: