শেরপুরে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী কালু মিয়াকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪ এর একটি দল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন তাকুয়া গার্মেন্টসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কালু মিয়া উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাকাকুড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে শেরপুর প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিং এ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, ভিকটিম (১৫) একজন গরীব ঘরের সন্তান। ভিকটিমের মা ঢাকায় যমুনা টেক্সটাইল মিলে অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার প্রেক্ষিতে ভিকটিম সপরিবারে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন রতনপুর গ্রামের নুরুল বাশারের ভাড়াটিয়া বাড়ীতে বিগত ৩ বছর যাবত বসবাস করে আসছিলেন। ভিকটিম (১৫) কালিয়াকৈর রতনপুর স্থানীয় ব্র্যাক স্কুলে ৫ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করতেন। প্রতি বছরের ন্যায় রোজার ঈদের ছুটি কাটানোর উদ্দেশে সপরিবারে গত ০৬/০৭/২০১৬ ইং তারিখে গ্রামের বাড়ীতে যান। ঈদের ছুটি শেষে ভিকটিমকে তার নানীর কাছে রেখে ভিকটিমের মা, ভাই ও বোনসহ গাজীপুর চলে যান।
ভিকটিমের মামা গত ২০/০৭/২০১৬ ইং তারিখে ভিকটিমের মাকে ফোন করে জানায় যে, গত ১৯/০৭/২০১৬ ইং তারিখ রাত ৮ ঘটিকা হতে ভিকটিমকে অনেক খোজাখুজি করেও পাওয়া যাচ্ছেনা। উক্ত সংবাদ শুনে ভিকটিমের মা গ্রামের বাড়ীতে চলে আসেন এবং ভিকটিমের নানীর কাছ থেকে জানতে পারেন যে, বাকাকুড়া গ্রামের মৃত ফজল হকের ছেলে মো. আমান উল্লাহ (২৩) ভিকটিমের বাড়ীতে এসে কথাবার্তা বলিত। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। ভিকটিম আসামী মো. আমান উল্লাহকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাহা প্রত্যাখ্যান করে ধর্ষণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এমতাবস্থায় আসামী কালু মিয়া ভিকটিমের সাথে কথা বলার উদ্দেশে বাড়ীতে এসে ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই ভিকটিম নিখোঁজ হয় এবং আসামী আমান উল্লাহ ও তার মা এবং কালু মিয়া পলাতক হয়। ভিকটিমের মা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে কোন সন্ধান না পেয়ে গত ২১/০৭/২০১৬ ইং তারিখ বেলা অনুমান ১০ ঘটিকার সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিস্টারকে বিষয়টি অবগত করেন। তার কিছুক্ষণ পর মেম্বারের কাছে জনৈক ফজল ফোন করে জানায় যে, জিয়ারখালে একটি লাশ পাওয়া গেছে।
এই সংবাদের প্রেক্ষিতে মেম্বার ও ভিকটিমের মা পশ্চিম বাকাকুড়া এতিমখানার পশ্চিম পাশে জিয়ারখালে পানিতে ভাসমান একজনের লাশ দেখতে পেয়ে পানি থেকে উপরে তুলে ভিকটিমের মা তার মেয়ের লাশ সনাক্ত করেন। উক্ত লাশটি বীভৎস অবস্থায় দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ এসে ভিকটিমের সুরতহাল প্রস্তুতপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়।
এর প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে এজাহার দাখিল করিলে অফিসার ইনচার্জ ঝিনাইগাতী থানায় মামলা নং ১৬/১০৫, তারিখঃ ২১/০৭/২০১৬ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ রুজু করেন। তদন্তকারী অফিসার মামলার তদন্ত শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন ২০০০-এর ৪/৯(৩)/৩০ ধারায় অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামী কালু মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়। দীর্ঘ ৭বছর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কালু মিয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সামিউল ইসলাম নাম ধারন করে শ্রমিক এবং রাজমিস্ত্রী পেশায় নিয়োজিত ছিল।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক, নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর গত ১৮/১০/২০১৮ ইং তারিখে আসামী কালু মিয়া (৪০)’কে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইন ২০০০-এর ৯(৩) ধারার অপরাধে দোষী সাবস্থ্য করে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম. সবুজ রানা এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি অভিযানিক দল গত মঙ্গলবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন তাকুয়া গার্মেন্টস এর সামনে থেকে কালু মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে ঝিনাইগাতী থানার মামলা নং ১৬/১০৫, তারিখঃ ২১/০৭/২০১৬ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ মূলে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: