জিএম লাঞ্ছিতর ঘটনায় সিবিএ’র সভাপতি ও সা. সম্পাদকসহ ১৩ জনকে শোকজ ও বদলী

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৪৫ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতাদের হাতে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেনকে লাঞ্চিতের ঘটনায় জড়িত সিবিএর সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ ১৩ জনকে শো’কজ ও বদলী করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৩০ জানুয়ারী) বিসিআইসি’র ডিসিওপি (প্রশাসন-১) কামরুজ্জামান শেখ ও যমুনা সার কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আশরাফুল ইসলাম পৃথক দুটি নোটিশের মাধ্যমে বদলী ও শোকজএর আদেশ দেন।

শোকজ ও বদলী প্রাপ্তরা হলেন, যমুনা সারকারখানার মাষ্টার টেকনিশিয়ান ও জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ময়েন উদ্দিন, মাষ্টার টেকনিশিয়ান একেএম মাহবুবুর রহমান, মাষ্টার অপারেটর ও সাবেক জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সিবিএ’র সভাপতি আব্দুস সালামকে কর্ণফুলী পেপার মিলস লিঃ ও যমুনা সারকারখানার কাগজকল হেলপার আবুল হোসেনকে চিটাগাং কেমিক্যাল কমপ্লেক্সে শোকজ করে বদলির আদেশ প্রদান করা হয়।

অপরদিকে উশৃঙ্খলতার অভিযোগে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও মাষ্টার টেনিশিয়ান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহ জাহান, এসটি-১ তুলা মিয়া, মাস্টার টেকনিশিয়ান হেলাল উদ্দিন, মাসুদ রানা, নূরে আলম খান, মাস্টার অপারেটর আব্দুস সালাম, কাগজ কল হেলপার ক্লীনার আবুল হোসেন, মাস্টার টেকনিশিয়ান এ কে এম মাহবুবুর রহমান, ময়েন উদ্দিন, এসটি-১ রসুল মিয়া, রেকর্ড সর্টার শাহীন হোসেনকে শোকজ করা হয় বলে জানাগেছে।

কারখানা সূত্রে জানা যায়, জেএফসিএল এর জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন এর সাথে উশৃঙ্খলতার বিষয়টি তদন্ত কমিটি সনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী আচরণ অসদাচরণ সামিল এবং সংস্থা/কারখানার নিয়ম কানুনের পরিপন্থী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে না তার লিখিত জবাব পত্র প্রাপ্তির সাত কার্য দিবসের মধ্যে জেএফসিএল এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক বরাবর প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন সহকারী ব্যাবস্থাপক (প্রশাসন) আশরাফুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, কারখানার কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথা সময়ে কাজে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহনের পাশাপাশি হাজিরা পর্যবেক্ষণ শুরু করে। গত ২রা জানুয়ারী সকালে কারখানার জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন ও নিরাপত্তা উপ-পরির্দশক হান্নানুজ্জামান কারখানা গেটে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাজিরা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় কাজে যোগদানের সময় নির্ধারিত রয়েছে। দেরীতে আসা ব্যাগিং সেকশনের মাষ্টার অপারেটর সিবিএ সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ময়েন উদ্দিনকে খাতায় এন্টি করে যেতে বলায় তিনি বিষয়টি অপমান জনক মনে করে ক্ষমতার দাপটে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে তিনি কারখানার ভিতরে গিয়ে সিবিএ’র সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারন সম্পাদক শাহজাহানের নিকট নালিশ করেন। বিষয়টি কোনধরনের যাচাই বাছাই না করে সিবিএ’র নেতারা কারখানার গেট থেকে মিছিল সহকারে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হয়ে জিএম প্রশাসনএর বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং তার বদলীর দাবীতে শ্লোগান দেয়। পরিস্থিতি বেগতি দেখে সকাল সাড়ে ১০টায় সারকারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেনকে সারকারখানার গাড়ী দিয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি গাড়ীতে উঠলে তাকে গাড়ী থেকে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাজাহান নেতৃতে সিবিএ’র প্রচার ও শ্রম কল্যান সম্পাদক ও মাষ্টার টেকনিশিয়ান ময়েন উদ্দিন, সহ হেলাল উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন গাড়ী থেকে জোর পূর্বক নামিয়ে দেন। পরে জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেন পায়ে হেটে বাসায় যেতে বাধ্য হন। এ ঘটনাটি বিসিআইসির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ৩রা জানুয়ারী তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: