বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কবরস্থান দখল চেষ্টার অভিযোগ

কক্সবাজার শহরের কলাতলী বাইপাস সড়কের উত্তর জেল গেইট এলাকায় আজিজ নামে এক বিএনপি নেতা পুরোনো কবরস্থান দখলে মরিয়া হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকার মুরব্বিসহ নানা বয়সীদের কবর সমেত গোরস্থান জবর-দখলের হাত থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়ে ডিসির কাছে গত ৩০ জানুয়ারি (সোমবার) আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। এরপরই প্রতিবাদকারিদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করে সমাজ সর্দারকে অপরাধী উল্লেখ করে মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে ভূমিদস্যু চক্রটি।

তবে, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান বলেছেন পাহাড় ও টিলা শ্রেণির এ জমি তার নামে রেজিষ্ট্রিকৃত। কিন্তু জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানের। গেল বর্ষা ও এর আগে ওই এলাকা হতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসে থাকা বেশ কিছু পরিবারকে সরিয়ে এনেছিল প্রশাসন।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা উত্তরণ এলাকার জেলগেইট উত্তর পাড়ার বাসিন্দা মৃত দানু মিয়ার ছেলে সাহাব উদ্দীনের দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, জেলগেইট উত্তর পাড়ায় প্রায় দশ হাজার লোকের বাস। সমাজে বাস করা লোকজন মারা গেলে এলাকার নাঝখানে স্থাপন করা কবরস্থানে দাফন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রথা চলে এলেও সম্প্রতি পুরানো কবরস্থানটি জবরদখলে উঠেপড়ে লেগেছে কক্সবাজারের ভূমিদস্যূ হিসেবে পরিচিত পাহাড় খেকু বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান ওরপে অধ্যাপক আজিজ। তার নির্দেশে ২০-২৫ জনের একটি চক্র কবরস্থানের আশপাশের জমি দখলের সাথে কবরস্থানটিও দখলে নিতে প্রচেষ্টা চালায়। স্থানীয় সমাজ নেতা ও জনপ্রতিনিধীরা তাদের দখল কান্ডে বাঁধা দিলে ভূমিদস্যুরা তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

আরো উল্লেখ করা হয়, তাদের দখলকান্ড সহজ করতে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও সমাজের সভাপতি ইউনুসসহ কয়েকজনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। অভিযুক্ত ভূমিদস্যূ আজিজের নিকটাত্মীয় বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের উচ্চস্থরে চাকুরীর সুবাদে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করে দখলকান্ড নির্বিঘ্ন করছেন। পাহাড় কেটে ফ্লট করে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুশি রাখতে বিনামূল্যে তাদেরও ফ্লট দেয়ার জনশ্রুতি রয়েছে।

ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও জেল গেইট সমাজের সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, সমাজের মানুষের ডাকে কবরস্থান রক্ষা করতে গিয়েছিলাম। এটা এখন আমার জন্য কাল হয়েছে। সমাজের লোকজনের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করতে আমাকে প্রধান করে এলাকার নারী-পুরুষসহ আরো কয়েকজনের নামে মামলা করেছেন ভূমিদস্যু চক্রটি। সরকারি জমির কবরস্থানটি রক্ষায় সমাজের লোকজন ৩০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দেয়ার পর গত দুদিন ধরে বিজ্ঞাপন আকারে আমার নামে মিথ্যা তথ্যে পত্রিকায় অপপ্রচার করা হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান বলেন, পাহাড় ও টিলা শ্রেণির এ জমি আমার নামে রেজিষ্ট্রিকৃত। কবরস্থান ও সমাজের কথা বলে ইউনূসরাই তা দখলের চেষ্টা করছেন। ওখানে আমি বাঁধা দিয়ে পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি।

পাহাড় কিভাবে রেজিষ্ট্রি জমি হয়? আর ব্যক্তিজমি হলে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান কেন চালিয়েছিল- এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কবরস্থান জবর দখল থেকে রক্ষার আবেদন বলে একটি অভিযোগ পেয়েছি। জায়গাটি সরকারি। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।