খাগড়াছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে বাধা, হুমকিতে শিক্ষা কার্যক্রম

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:২০ পিএম

খাগড়াছড়িতে আনন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ মন্দির কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণ হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জটিলতা দ্রুত নিরসনের দাবী জানিয়ে গেল ২২ই ডিসেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর চিঠিও দিয়েছেন আনন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলি ত্রিপুরা। চিঠিতে তিনি যথাসময়ে ভবন নির্মাণ না হলে বিদ্যালয়ের পাঠদান বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

আনন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পিইডিপি-৪ এর আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বিগত বছরের ৩ নভেম্বর পুরাতন ভবন ঠিকাদারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এসময় বিদ্যালয়ের পাঠদান চলমান রাখতে ৭ মাসের সময় নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন দ্রুত বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারলে অনিশ্চিতের মুখে পড়তে পারে শিক্ষা কার্যক্রম।

এদিকে বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের ১৫ই জানুয়ারি দুদফা চিঠিও দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু এবং শেষ করতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ঐ চিঠিতে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় নির্মাণের সাব ঠিকাদার মো. হাবীব বলেন, 'আনন্দ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু করতে আমাদের শ্রমিকরা সেখানে গিয়েছিল। শ্রমিকরা লেবারশেট বানাতে গেলে মন্দির কমিটির লোকজন তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা শ্রমিকদের মারতে চড়াও হয়। লেবারশেট আর বানাতে পারিনি। বর্তমানে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।'

আনন্দ নগর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজল দে বলেন, 'আনন্দ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আমাদের মন্দিরটি পাশাপাশি রয়েছে। মূলত আমরা এলাকাবাসী এখানে বিদ্যালয়ের জন্য জায়গা দাণ করেছিলাম। এমনিতেই এখানে জায়গা কম রয়েছে। এর মধ্যে এখানে নতুন করে ভবন নির্মাণ হলে মন্দিরটি ঢাকা পরে যাবে। এজন্য এলাকাবাসী সহ আমরা বিদ্যালয়টি এখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র স্থাপন করতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর দাবী জানিয়েছি। বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরালে আমাদের সবার জন্যই ভাল হতো।'

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রাজু আহমেদ বলেন, 'সমস্যাটি মূলত স্থানীয়দের। বিদ্যালয়ের যে জায়গা দেখিয়ে ভবন নির্মাণের প্রস্তাব আনা হয়েছে এর বাহিরে আমরা কাজ করতে পারবোনা। ইতোমধ্যে আমাদের ঠিকাদার সেখানে কাজ করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। ফলে কাজ বন্ধ রয়েছে। সমস্যা সমাধান হলে আবার কাজ শুরু করতে পারবো। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।'

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, 'আনন্দ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণে বিদ্যালয় ও মন্দির কমিটির মধ্যে জায়গা নিয়ে একটু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি শুনেছি। মূলত বিদ্যালয়ের যে জায়গা দেখিয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে সেখানেই বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করার নিয়ম রয়েছে। এর বাহিরে কাজ করার কোন সুযোগ নেই। বিদ্যালয় ভবনটির কাজ দ্রুত শুরু করতে পারলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী উপকৃত হবে।'

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: