বক্তব্য আগে পরে দেওয়া নিয়ে মাইক কাড়াকাড়ি, প্রকাশ্য হত্যার হুমকি

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:৪৬ পিএম

পরশুরামে বিএনপি নেতা জানাজার বক্তব্য আগে পরে দেওয়া কে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সম্পাদকের বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও পরশুরাম পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমদ চৌধুরী সাজেল'র মধ্যকার বিরোধ এখন যেন মনে হুমকি স্বরুপ।প্রতিনিয়ত এলাকায় ফুটচে ককটেল, চলচে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।

উভয় জনপ্রতিনিধি হলেও প্রকাশ্য দলীয় কর্মসূচির বাইরে উভয়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এখন দলের বৃহৎ দুটি অংশে বিভক্ত করে রেখেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষে সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হুমকি, থানায় জিডি, গ্রেফতারের মত ঘটনা ঘটেছে। দলীয় বিরোধে প্রকাশ্যের দলের একজন সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকে রড় দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়।আহত আ'লীগ নেতা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি। এ ঘটনায় দলীয় আট জন নেতা কর্মী গ্রেপ্তার হয়।

এদের মধ্যে একজন উপজেলা আ'লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং অন্য একজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব রয়েছেন উপজেলা শাখার এমন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে বিব্রত জেলা নেতৃবৃন্দরা।

এ বিষয়ে জেলা আ'লীগের দপ্তর সম্পাদক এ কে এম শহিদুল্লাহ খন্দকার জানান' আমরা বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিনে দলীয় কর্মীদের সাথে কথা বলে দেখব এবং উভয়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

দলীয় সূত্র মত, প্রায় এক বছর যাবৎ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মধ্যে এলাকা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিয়মিত সংঘাত- সংঘর্ষ বাক-বিতন্ডা, হুমকি এবং দাওয়া ফাল্টা দাওয়া লেগেছিল। যা প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার জানাজায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে। এই ঘটনার পর থেকে থানায় জিডি হয়।

প্রকাশিত ঘটনায় বৃহস্পতিবার উভয়েই নিজ নিজ কার্যালয় ফেনী থেকে সাংবাদিক যোগাযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন।

এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল মজুমদার দাবি করেন 'বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে হত্যা হুমকি ঘটনা বহু পুরনো
তার সম্মানকে ক্ষুন্ন করতে মেয়র ও তার নিলজ্জ কর্মীবাহিনী মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা অব্যাহত রেখেছে।তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে এর সম্পূর্ন দায়ভার সাজেলের।

এই ঘটনা নিয়ে নিজাম উদ্দিন আহমেদ সাজেল জানান' হামলার ঘটনা মজুমদারের ভিত্তিহীন নাটক। মজুমদার সরকারি জায়গা দখল করে গুদাম এবং দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। আমরা পৌরসভার ড্রেন করতে গেলে তার ঘর ভাঙ্গবে। এমনটা দাবি করেই তিনি মূলত ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপরে হামলা চালাচ্ছেন।

সরকারি জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি জেলা পরিষদ থেকে ইজারা নেওয়া কিছু জমি ও পৈতৃক জমিতে স্থাপনা করেছি। নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী একনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে হাইব্রিডদের প্রাধান্য দেন, নেতা-কর্মীদের গায়ে হাত তোলেন-এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’

সংবাদ সম্মেলন ছাড়াও থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর থেকে সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদের পক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে পরশুরামে একাধিক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সভাপতির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনাদি রঞ্জন সাহাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়।

আহত অনাদি রঞ্জন সাহা অভিযোগ করেন, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী অনুসারীরা মুঠোফোনে তাঁকে ডেকে নিয়ে হামলা করেছেন। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক একরামুল হক চৌধুরী ও পৌরসভার একটি ওয়ার্ড শাখার সভাপতি মো. ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দুজন নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর অনুসারী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: