দুই গাছের বিয়ে

প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৩, ০৬:৫৫ পিএম

দু’টি গাছ পাশাপাশি। একটি বট গাছ অন্যটি পাকুড় গাছ। গাছ দুটি লাগানো হয়েছে ৫/৭ বছর আগে। এবারে গাছে ফল ধরার সময় হয়েছে। ফল ধরার আগেই তাদের দুই জনের বিয়ের কাজটা সেরে ফেলতে হবে। তাই তাদের জন্য বিয়ের আয়োজন। পাকুড় গাছটিকে মুখোশ, ধুতি, পাঞ্জাবী পড়িয়ে সাজানো হয়েছে বর বেশে। আর বটগাছটিকে মুখোশ এবং শাড়ি পড়িয়ে সাজানো হয়েছে কনে বেশে।

বর কনের জন্য সাজানো হয়েছে বিয়ের আসর। পাশে বরযাত্রীদের জন্য টাঙানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। বর কনের আসরের একদিকে কনে পক্ষের যজ্ঞ ও পুজা অর্চনা অপরদিকে চলছে বরপক্ষের যজ্ঞ ও পুজা অর্চনা। সেইসাথে ঢোলের বাজনা। বিয়ের আনুষঙ্গিক জিনিস পত্রের মধ্যে ছিল, কলা, শাড়ি, ধুতি, লুঙ্গি, গামছা, লাল শালু কাপড়, পান সুপারি, আবির, কনের জন্য প্রসাধন সামগ্রী, মিষ্টি, হলুদ, নারিকেল, ছাতা, হাঁড়ি, পাতিল এবং বর কনের জন্য আগতের পক্ষে উপটৌকন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়ের আয়োজনের কোন কিছুরই কমতি ছিল না। বট পাকুড়ের এ বিয়ে দেখতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভীড় জমান। গোটা এলাকায় উৎসব মূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

বুধবার (১ মার্চ) দিনভর চলে বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিল প্যান্ডেল সাজানো, যাগযজ্ঞ প্রতিষ্ঠা, গিতা পাঠ, বেদ পাঠ, মাতৃকা পুজা, বসুধারা ও বুদ্ধি শ্রাদ্ধ। ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নওদাবশ পারঘাট শিব মন্দির মাঠে বট পাকুড়ের বিয়ের আয়োজন করেন ওই গ্রামের হিরম্ব কুমার রায় তার স্ত্রী নীলা রানী ও তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে স্বপ্নীল রায় তার স্ত্রী মৌসুমি বর্মন, বোন অনামিকা রায় বর পক্ষ।

আর অপর ছেলে শুভ্রনীল রায় ও ইন্দ্রনীল রায় মেয়ে পক্ষ। বট পাকুড়ের এ বিয়েতে পুরোহিত ছিল ৬ জন। পুরোহিত বিভূতি চক্রবর্তী বলেন, পৃথিবীর সকল জীবের মঙ্গল কামনায় এ অনুষ্ঠান করা হয়। আয়োজক হিরম্ব কুমার রায় জানান, বৃক্ষ ধরিত্রী শীতল রাখে এবং বৃক্ষের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা সকল জীবের আহার প্রদান করেন। আমার পূর্ব পুরুষরাও এরকম যজ্ঞ করতেন বংশ পরম্পরায় আমি করছি। স্থানীয়দের কাছে এটা বট পাকুড়ের বিয়ে হিসেবেই পরিচিত। সৃষ্টিকর্তা সকলের মঙ্গল করুক।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: