দুগ্ধপোষ্য শিশুসহ প্রসূতিকে জেলে ও স্কুলশিক্ষার্থীকে মারধর, ওসির প্রত্যাহার দাবি

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৪:৫০ পিএম

স্বামীর অপরাধে দুগ্ধপোষ্য শিশুসহ স্ত্রীকে আটকের পর গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠানো ও রাতের আঁধারে সাদা পোশাকে সড়কে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ গোলাম কবিরের প্রত্যাহার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সর্নস্থরের জনতা।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগাঁও ষ্টেশনে এ দাবি জানান। অন্যথায় স্থানীয় জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালনের হুমকিও দিয়েছেন তারা।

এসময় বক্তারা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঈদাগাঁও থানার ওসি গোলাম কবিরকে প্রত্যাহার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণার হুমকি দেন তারা।

তারা বলেন, স্বামীর অপরাধে ২ শিশুসহ এক প্রসূতিকে ২৫ ঘন্টা আটকে রেখে পরে মামলা নথিভুক্ত করে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়াও রাতের আঁধারে সাদা পোশাকে সড়কে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় জাবের আহমদ জিসান নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত ওসি গোলাম কবিরকে প্রত্যাহার করতে হবে।

বক্তাদের মতে, ঈদগাঁও থানার ওসি গোলাম কবির যোগদানের পর থেকে ঘুষবানিজ্য, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি, দালাল শ্রেণির লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয়হীনতার কারনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঈদগাঁও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ বলেন, এ ওসির কোনও ধারণা নেই। ওসির অপকর্ম, অতীত কর্মকাণ্ড, অনিয়ম সম্পর্কে ধারণা নিতে পুলিশ কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানান। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে সাধারণ জনতা।

রাশেদ বলেন, চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর ওপর পুলিশের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং গর্হিত অপরাধ। তারা বড় ২টি অপরাধ করেছে। প্রথমত চাঁদাবাজি, দ্বিতীয়ত শিক্ষার্থীর ওপর হামলা। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

এ সময় সড়কে উভয় দিক থেকে আসা যাওয়া যানবাহন আটকা পড়লে যানজটের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ, জেলা যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির চৌধুরী হিমু, সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মিজানুল হক, নির্যাতিত নারী ফরিদা ইয়াসমিন। এসময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নারী পুরুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নেন৷

জানা যায়, সম্প্রতি ২ টি ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচিত হয়। গত ২০ মার্চ জালালাবাদে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে স্বামীকে না পেয়ে স্ত্রী, দুগ্ধপোষ্য ও দুই বছরের একটি বাচ্চাসহ এক প্রসূতিকে আটক করে পরে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। পরের দিন বাচ্চাসহ নারী ফরিদা ইয়াসমিন জামিনে মুক্তি পায়।

২১ মার্চ রাতে সাদা পোশাকের ৭ পুলিশ সদস্য বাজারের চাঁদাবাজি কালে পথচারী এক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রতিবাদ করে। এক পর্যায়ে তারা দলবদ্ধ হয়ে ঐ স্কুল ছাত্রের উপর হামলা করে আহত করে। এ দুইটি ঘটনায় নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফুঁসে উঠেছেন মানবাধিকার কর্মীরাও।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর, রামু ও ঈদগাঁও সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: