জয়পুরহাটে অনাবাদি ও পতিত জমিতে দোল খাচ্ছে সজিনা

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩, ১০:১৩ এএম

সজিনার ভারে দোল খাচ্ছে অনাবাদি, পতিত জমি ও রাস্তার দুপাশে লাগানো সজনার গাছ গুলো। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন জেলার কৃষকরা।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ২ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ২ হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে। এতে সজিনার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭শ মেট্রিক টন। সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ, বম্বু, ভাদসা, দোগাছী, জামালপুর, দোগাছী, চকবরকত, ধলাহার ও পাঁচবিবি উপজেলার আয়মারসুলপুর, মোহাম্মদপুর, আওলাই ও কুসুম্বা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে বারোমাসি সজিনার চাষ হচ্ছে।

এ ছাড়াও কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। বসতবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতিয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছ গুলো এখন সজিনার ভারে দোল খাচ্ছে।

জেলায় পুষ্টিগুণে ভরা সাজনা চাষ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এখানকার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় কৃষক নাজমুল হোসেন। এ ছাড়া পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন। বাজারে ওঠা প্রথম দিকে আগাম জাতের ও বারোমাসি সজিনা ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানেও বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা।

সদর উপজেলার ধলাহার এলাকার সজিনা চাষী মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, বাড়ীর সমনে রাস্তার দু’ধারে ১০টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৮ মণ সজিনা বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে।

আশা করছি এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব। বাজারে প্রথম দিকে ২শ টাকা কেজি সজিনা বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

জয়পুরহাটের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর সবজি। সজিনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানব দেহের কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের অনেক উপকারী। তাছাড়া সজিনার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আশঁজাতিয় সবজি। এটি বসতবাড়ির আশপাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও চাষ করা যায়। সজিনা চাষে তেমন খরচ লাগে না। বাজারে দামও ভাল পাওয়া যায়। সজিনা গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: