নিয়োগ পরীক্ষা, ফলাফল ঘোষণা না দিয়েই পালিয়ে গেল কমিটি

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৮ এএম

পঞ্চগড়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল ঘোষণা না করেই পালিয়ে গেছে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বজনপ্রীতি করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মনোনিত লোককে পূর্ব থেকেই নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করে আসছিল বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রায় তিনঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ফলাফল ঘোষণা না দেওয়ায় বিক্ষোভ করে চাকুরী প্রার্থীরা।

এক পর্যায়ে ফলাফল ঘোষণা করার জন্য প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যনেজিং কমিটির সভাপতিকে অবরুদ্ধ করে রাখে চাকুরি প্রার্থী ও তাদের স্বজনরা। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষ এবং চত্তরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ঘটনাটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের বোয়ালমারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৯ মার্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে পরীক্ষা অনুষ্টিত হওয়ার কথা ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ওইদিন চাকুরি প্রার্থীরা বিদ্যালয়ে এসেছিল কিন্তু সেদিন বিদ্যালয়টির সভাপতি অসুস্থ্য হওয়ার কারনে নিয়োগ পরীক্ষা অনু্ষ্ঠিত হয়নি। তবে পরীক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছিল। সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে স্থগিতকৃত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে পরীক্ষার্থী অভিবাবক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং প্রধান শিক্ষককে নিয়ে বাকবিতন্ডা হট্টগোল তৈরি হয়।

এ সময় নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও পঞ্চগড় সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন এবং তার সফরসঙ্গী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী কৌশলে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীন জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষায় আমাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১১ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিল। নিয়োগ বানিজ্য হয়েছে এই স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষায়। তিনি বলেন ফলাফল ঘোষণা করতে দেরী হওয়ার খবর শুনে আমি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা ফলাফল না দিয়ে সোমবার সন্ধ্যার কিছুক্ষন আগে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি জাকির হোসেন জানান, ফলাফল ঘোষণার দায়িত্ব হচ্ছে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি আকবর মুহুরি এবং প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার। আমরা পালিয়ে আসিনি জনসম্মুখে বিদ্যালয় ত্যাগ করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী জানান, নিয়োগ কমিটি পালিয়ে যায়নি। এই নিয়োগ পরীক্ষা সঠিকভাবে নিয়ম মেনে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের দায়িত্ব বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের। লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমরা জনসম্মুখে বিদ্যালয় ত্যাগ করেছি।

এদিকে ঘটনার খবর শুনে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের কাছে নিয়োগের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে প্রধান শিক্ষক কোন তথ্য না দিয়ে তড়িঘরি করে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। পরে প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: