• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫ মিনিট পূর্বে
মোঃ জামাল বাদশা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৫ জুন, ২০২৩, ০৩:৫৪ দুপুর
bd24live style=

দলিল লেখকের কৌশলে মাকে ঠকিয়ে জমি লিখে নিলো ছেলে

ছবি: প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে সিন্ডিকেট করে বৃদ্ধা নারীর ২ শতক জমি রেজিস্ট্রির কথা বলে ২৭ শতক জমি দলীল লেখকের যোগসাজসে কৌশলে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ তুলে গতকাল দলীল লেখকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। দলীল লেখক সমিতি মোজাম্মেল হককে চার কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।

ভুক্তভোগীর আবেদন ও আদিতমারী সাব রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী এলাকার মৃত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম গত ৬ জুন আদিতমারী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মসজিদ মাদরাসার জমি দানের জন্য আসেন। এর আগে থেকে তার ছেলে এমদাদুল দুই শতক জমি লিখে দেয়ার জেদ করতে থাকলে একই দিন দুই শতক জমি লিখে দিতে রাজি হন। এমতাবস্থায় এমদাদুল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে দুই শতক জমির স্থলে ২৭ শতক জমি লিখে নেন। এতে দলীল লেখক মোজাম্মেল হক যোগসাজশ করে তার অন্য ছেলে ও লোকজনদের সেখান সরিয়ে দিয়ে ২৭ শতক জমিতে দলীল সম্পাদন করেন। ভুক্তভোগী বয়স্ক বৃদ্ধা হওয়ায় ও কানে কম শোনায় কৌশলে সন্ধার পর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলীল সম্পাদন করা হয়।

পরেরদিন বিষয়টি বুঝতে পেরে সাব রেজিস্টারের  অফিসে যোগাযোগ করে প্রতিকার চান। এক পর্যায়ে প্রতারণার অভিযোগে দলীল লেখক সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দলীল লেখক মোজাম্মেল হক কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আদিতমারী দলীল লেখক সমিতি। আগামী ৪ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে এ বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণ সহ লিখিত উত্তর দিতেও বলা হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে দলীল লেখক মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে এর আগেও জ্বাল দলীল করার অভিযোগ আছে। প্রায়ই তিনি এমন কাজ করেন। এর আগে মার্চ মাসের ১৪ তারিখ দানপত্র দলীলে অন্য দলীল লেখকের নাম দিয়ে রেজিস্ট্রি করেন তিনি। দলীল লেখক শ্যামল চন্দ্র বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৯ মার্চ দলীল লেখক সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে সাংগঠনিক প্রতিকার চান। পরে ভূল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় বিষয়টি রেজিস্ট্রি অফিসে বসে মিমাংসা করা হয়।  ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মোজাম্মেল হক তার ছেলের সাথে মিলিত হয়ে ঠকিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী আনোয়ারা বেগম বলেন, অনেক আগে থেকেই এমদাদুল ঋণ করার জন্য দুই শতক জমি লিখে চায়। ওইদিন মসজিদ-মাদরাসার জন্য জমি লিখে দিতে আমরা রেজিস্ট্রি অফিসে গেছিলাম। সন্ধার দিকে আমার ছেলেকে দুই শতক জমি লিখে দেই। আমি বারবার বলেছি দুই শতকের বেশি দেবোনা। কিন্তু দলীল লেখক যোগসাজশ করে আমাকে কৌশলে প্রতারণা করে ২৭ শতক জমি দলীল করেছে। জানতে পেরে আমি সাব রেজিস্ট্রি স্যারকে জানিয়েছি, লিখিত আবেদনও দিয়েছি।

বয়স হইছে তাই  কানে কম শুনি, বুঝিও কম। দলীল লেখক আমাকে শিখিয়ে দিছিলো স্যার (সাব রেজিস্ট্রার) যেটাই বলবে তাতেই হ্যা বলবেন। আমি সঠিক বিচার চাই, আমার জমি আমাকে ফেরত দেওয়া হোক। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীর সতীন হাছনা খাতুন বলেন, আমরা ওইদিন সবাই মিলে মসজিদের জমি দান করতে গেছিলাম। পরে মেয়ের বাড়িতে ভাত খেয়ে সন্ধায় আসলে আমাদেরকে সরিয়ে রেখে দলীল লেখক প্রতারণা করে  দুই শতকের জায়গায় ২৭ শতক জমি দলীল করেছে। 

ভুক্তভোগী ছেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, আমিও সেদিন গেছিলাম মসজিদের জমি দান করতে। দান করার পর চলে আসছি। সন্ধায় আমার মাকে ঠকিয়ে দলীল লেখক মোজাম্মেল মোটা অংকের টাকা খেয়ে ২ শতকের জায়গায় ২৭ শতকের রেজিস্ট্রি করেছেন। আমরা আরও ৮ ভাই ওয়ারিশ আছি।

এসময় সাথে থাকা অটো চালক হযরত আলী বলেন, বৃদ্ধা মহিলা বারবার বলছিলো ২ শতকের বেশি দেবোনা তখন আমিও বারবার বলেছি দুই শতকের বেশি দলীল করিয়েন মা। কিন্তু আমাকে ওখানে থেকে চলে যেতে বলে তারা দলীল করেন। আদিতমারী দলীল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, বৃদ্ধা মহিলার প্রতারণার একটি আবেদন পেয়েছি। সেই প্রেক্ষিতে দলীল লেখক মোজাম্মেল হককে চার কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত ছেলে এমদাদুল কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার বাড়িতে গেলেও তার দেখা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দলীল লেখক মোজাম্মেল হক বলেন, ২ শতক নয় ২৭ শতক জমি তিনি রেজিস্ট্রি করেছেন। এখন তিনি পাগলাপাগলি করছেন।  আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। কারণ দর্শানোর নোটিশ কেন দেওয়া হলো এ বিষয়ে তিনি জানেন না বলে প্রতিবেদককে জানান।

আদিতমারী উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার রাশেদুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধা মহিলা আমার কাছে এসেছিলো অভিযোগ নিয়ে। আমি শুনেছি। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক তাই পারিবারিক ভাবেই সমাধান করতে বলা হয়েছে। চাইলে তারা আদালতে মামলা করতে পারে। আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।

আশরাফুল/সা.এ.

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:


BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]