
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কুমোড় বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন পৌরএলাকার সাহাপাড়া এলাকার নারীরা। নারীরা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমোড় বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিদিন একেক জন নারী গড়ে ৫ থেকে ৬ কেজি বড়ি তৈরি করেন। সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা না পেলেও বংশ পরম্পরায় বছরের পর বছর ধরে বড়ি এ অঞ্চলে তৈরি হয়ে আসছে।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ এলাকায় প্রতি মৌসুমে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার কুমড়াবড়ি বেচা-কেনা হয়ে থাকে। স্থানীয়দের দাবি, সরকারি সহযোগিতা পেলে এখানকার বড়ির চাহিদা বাড়বে। কারিগররা আরও বেশি কুমড়াবড়ি তৈরি করতে পারবে। এই কুমড়াবড়ি তৈরি করেন পরিবারের নারী সদস্যরা আর হাঁটে বাজারে বিক্রির করে পুরুষরা। প্রতি বছরের মত এবার আগাম অক্টোবর মাস থেকে বড়ই তৈরি শুরু হয়েছে চলে মার্চ মাস পর্যন্ত। কুমোড় বড়ি তৈরির একমাত্র প্রধান উপাদান হলো মাসকলাই ডাল। সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে মাসকলাই চাষ হয়। হাটবাজার থেকে কালাই সংগ্রহের পাশাপাশি চাষ করা কলাই দিয়ে দিনভর চলে কর্মযজ্ঞ।
সাহাপাড়া গ্রামের নিহার রানী সাহা, শ্যামলী দেবনাথ শংককুড়ি, মুনজুরী ও গীতা রানীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড়ি তৈরি করে বিক্রির পর এখন আর তেমন একটা লাভ থাকে না। বাজারে কলাইয়ের দাম বেশি। এ ছাড়া হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় কুমড়াবড়ি তৈরি করতে। দিনে এক জন ৫ থেকে ৬ কেজি মাসকলাইয়ের কুমোড় বড়ি তৈরি করেন। তৈরি করার পর তা শুকিয়ে বিক্রি করা হয়। মানের ভেদে ৩০০ থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। এক জন কারিগর দিনে ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত কুমড়াবড়ি বিক্রি করে থাকেন।
তারা আরও জানান, ৫ মাস চলে এই কুমড়াবড়ি তৈরি ও বিক্রির কাজ। তাতে ৫ মাসে কম করে হলেও এ পাড়ায় ১১ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার কুমড়াবড়ি বিক্রি হয়। অনেকেই দেশ-বিদেশে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন হাতে তৈরি এ বড়ি। আবহাওয়া ভালো না হলে কুমড়াবড়ি তৈরিতে ধস নামে। তখন বড়ি প্রস্তুত করতে অনেক সময় লাগে। কেনাবেচা কম হয়, বড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
তারা বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে আরো বেশি ও উন্নতমানের কুমোড় বড়ি তৈরি করতে পারবো।
সর্বশেষ খবর
এক্সক্লুসিভ এর সর্বশেষ খবর