অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ ফুটবল দলের আলোচিত খেলোয়াড় মোছাম্মত সাগরিকার পরিবার থাকে অন্যের জমিতে। মানুষের দেওয়া প্রায় ১০ শতাংশ জমির মধ্যে কাশঁবন, বাঁশের বাতা আর ছাপড়া টিন দিয়ে নির্মাণ হয়েছে বাড়ি। সেই বাড়ির ঘর হচ্ছে দুটি একটিতে থাকতেন সাগরিকা, আরেকটিতে তার ভাই সাগর। সাগরিকার বাব, মা থাকেন তাদের চায়ের দোকানেই। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের রাঙ্গা টুঙ্গি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা মিলে।
সাগরিকার বাবা মোহাম্মদ লিটন আলী ও মা আনজু আরা বেগম মিলে তাদের বাড়ি থেকে আধা কিলো দুরে বাশরাইল গ্রামের মহাসড়কের পাশে মানুষের জমিতে একটি চায়ের দোকান করেন। জীবন জীবিকা চলে এই চায়ের দোকান করেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাণীশংকৈল- হরিপুর মহাসড়কের বাশরাইল এলাকা থেকে মহাসড়কের উত্তর দিক দিয়ে শুরু পথ ধরে প্রায় আধা কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে যেতেই দেখা মিলে সাগরিকার বাড়ি। বাড়ির প্রবেশ পথেই ছোট একটি দরজা রয়েছে। বাড়িটি কাশঁবন দিয়ে বেড়া বানিয়ে ঘেরা দেওয়া রয়েছে। এছাড়াও ঘর দুটিও কাশবঁন দিয়ে বাশের বাতা দিয়ে বেড়া বানিয়ে ঘর করা হয়েছে। ঘরের ছাউনি হিসেবে রয়েছে ছাপরা টিন। অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ও টিউবওয়েল। সাগরিকার বাবা মা জানান, টাকার অভাবে ইচ্ছা থাকাও সত্ত্বেও স্বাস্থ্য সম্মত টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন নির্মাণ করতে পারছে না। সব মিলে বাড়ি ঘর ভাঙাচোরা।
স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব আলী,সোহেল রানা বলেন, সাগরিকারা অত্যন্ত গরিব। তারা খুব কষ্ট করে দিননিপাত করছে। অন্যের জমিতে কোনো রকম বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে। তারা আরো বলেন, সাগরিকার জন্য আজ আমাদের গ্রাম রাঙ্গা টুঙ্গি সারা দেশের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। সাগরিকার এ অর্জন আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব। তারা সাগরিকাকে দেশের সম্পদ আখ্যায়িত করে বলেন, সরকার যদি সাগরিকার পরিবারের পাশে দাঁড়ান,তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান। তাহলে সাগরিকার মত অনেক সাগরিকা ভালো খেলোয়াড় হওয়ার উৎসাহ পাবেন।
সাগরিকার বাবা লিটন আলী জানান, অন্যের বলতে উকিল নামে এক ব্যক্তির এ জমির কোন দাবিদার না থাকায় তারা সেখানে কোন রকম বাড়ি বানিয়ে থাকছেন। অর্থের অভাবে জমি কিনতে পারছে না। তাই সেভাবে বাড়িও বানাতে পারছে না।
সাগরিকার মা আনজু আরা বেগম বলেন, তার মেয়ে সাগরিকা যে পরিবেশে এখন থাকছে। সেই পরিবেশ তো আর তাদের বাড়িতে নেই। মেয়ে আসলে কোথায় কীভাবে তাকে থাকতে দিবে সেটি নিয়ে তিনি খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সাগরিকার মা আরো জানান, তার মেয়ে অনেক সময় তার বন্ধুদের নিয়ে তাদের বাসায় আসতে চান। কিন্তু তিনি নিষেধ করেন। সাগরিকার বন্ধুরা আসলে কোথায় বসতে দিবে, আর কোথায় থাকতে দিবে তা ভেবেই তিনি সাগরিকার বন্ধুদের আসতে বাড়ন করেন। সাগরিকার মা বলছেন, সমিতির লোন করে নিজস্ব জমি কেনার চেষ্টা করছেন। কম দামে জমি পেলে তিনি ঋণ করে জমি কিনবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর