বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫৭ কর্মকর্তা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। বিসিএসসহ অন্য চাকরিতে যোগ দিতেই এসব কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক অফিস আদেশে কর্মকর্তাদের পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি পদত্যাগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন উপপরিচালক এবং একজন অফিসার রয়েছেন। বাকি ৫৫ জন সহকারী পরিচালক বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে ৪৮ জনের পদত্যাগ কার্যকর হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল)। এছাড়া গত ৩১ মার্চ, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল একজন করে, ১৮ এপ্রিল দুইজন এবং ২১ এপ্রিল চারজনের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে। ইস্তফা দেয়া এসব কর্মকর্তার অধিকাংশই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া খুলনা ও বরিশাল অফিসে তিনজন করে, সিলেট অফিসে দুইজন, মতিঝিল, চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিসে একজন করে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর অ্যাকাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেয়া হতো। ২০১৯ সালের এডি ব্যাচ থেকে তা বন্ধ করে দেয়া হয়।
২০২২ সালের আগ পর্যন্ত তিন বছর পূর্ণ হলে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির যোগ্য হতেন কর্মকর্তারা। এখন পদ খালি থাকলেও চাকরির বয়স পাঁচ বছর না হলে পদোন্নতি পান না। আগে যোগদানের পর ৯ মাসের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ করানো হতো। এখন এক থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। আবার এই প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেয়া হতো। সেটিও এখন বন্ধ। আর সরকারি চাকরি পঞ্চম গ্রেডে প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা কার মেইনটেন্যান্স ভাতা দেয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে তা দেয়া হয় না।
দেশের অন্য যেকোনো চাকরির মধ্যে তুলনামূলকভাবে ব্যাংকের বেতন বেশি। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে নানাভাবে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা ছিল। সবক্ষেত্রে মেধাবীদের প্রাধান্য ছিল। তবে দেশের ব্যাংক খাতে বর্তমানে চলছে অস্থিরতা। সেই সঙ্গে অন্য চাকরির তুলনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও কমেছে সুযোগ সুবিধা। এছাড়াও ব্যাংক একীভূতকরণ, খেলাপি ঋণের রেকর্ড, ডলার ও তারল্য সংকটের মধ্যে গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্যাংক কর্মকর্তারাও যেন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর