বিগত ২৫ বছরের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে সোমবার (২৯ এপ্রিল। খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুধু খুলনায় নয়, গোটা বিভাগে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। দাবদাহে পুড়ছে পুরো বিভাগ। আজ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, গত ২৫ বছরের মধ্যে আজ খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, জলাশয় ভরাট ও গাছপালা কেটে স্থাপনা গড়ে তোলাই প্রধানত গরম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এ ছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। গত ২৫ এপ্রিল খুলনায় তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছর এপ্রিলে সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া খুলনায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, মোংলায় ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং কয়রায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে টানা ১৮ দিন থেকে (গত ১৩ এপ্রিল থেকে) তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। টানা দাবদাহে বিপাকে পড়েছে মানুষ। অসহ্য গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। বিপাকে পড়েছে মানুষ ও প্রাণীকুল। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে খুলনায় দফায় দফায় বৃষ্টির কামনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লীরা। নাভিশ্বাস নেমে এসেছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া গরমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে নলকূপ ও পাম্পে ঠিকমতো পানি উঠছে না।
অসহ্য গরমে পথচারী, যানবাহন চালক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কাছে পানি, শরবত ও ফল নিয়ে খুলনার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও তরুণ সমাজ।
খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষকে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।
এদিকে গত বছর এপ্রিলে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও এ বছর চলতি মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ৭ মিলিমিটার। গত বছর তাপদাহের স্থায়ীত্বকাল ছিল এক সপ্তাহ। আর এবার ১২ দিন ধরে চলছে তীব্র তাপদাহ। বিগত বছরগুলোতে তাপমাত্রা বাড়লেও কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় তাপদাহের স্থায়ীত্বকাল কম ছিল। চলতি এপ্রিল মাসে বৃষ্টি কম হওয়ায় গরমের প্রভাব বেশি।
সর্বশেষ খবর