• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৫ মিনিট পূর্বে
আব্দুল ওয়াদুদ
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১ মে, ২০২৪, ০৯:৪৪ রাত

হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে চলে ১৫ হাজার শ্রমিকের জীবন

ছবি: প্রতিনিধি

আজ মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে 'মে দিবস' হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে তীব্র তাপদাহে যেন সারা দেশ পুড়ছে। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ উপরের দিকে উঠছে। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে।

তারপরও একদল নারী-পুরুষ শ্রমিককে খালি পায়ে ইট-পাথরের চাতালে ধান শুকাতে দেখা যায়। স্থানীয় নিম্ন আয়ের মানুষ, নদী ভাঙ্গা ও রংপুর থেকে আসা শ্রমিক এই পেশার বেশি দেখা যায়। এ কাজে পুরুষের পাশাপাশি সংসারকে আরো সচ্ছল করতে নারীরাও কাজ করছে। স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক পরিবার। প্রচণ্ড রোদ মাথায় নিয়ে দিনভর শ্রম দিতে হয় তাদের। কিন্তু, আয়-রোজগার যা হয় তা দিয়ে চলে সংসার। তাদের হাড়ভাঙা শ্রমের তুলনায় মজুরি কম। তবে নারীরা আরো বেশি অবহেলিত। পুরুষের তুলনায় বেশি কম। 

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানাজায়, উপজেলায় লাইসেন্স ভুক্ত বর্তমানে ৯টি অটো ও হাস্কিং ১৮৭টি চালকল রয়েছে। এছাড়াও লাইসেন্স নবায়ন না থাকায় রয়েছে প্রায় ২শ, মিনি চাতাল প্রায় ১২শ রয়েছে। এসব কারখানায় কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক যার ৭০ ভাগই নারী শ্রমিক। তবে এই খাতে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে শ্রমের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের নেই কোনো তারতম্য। এখানে সবাই এক কাতারে কাঁধে কাঠ মিলিয়ে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। হোক সেটা ভারী কিংবা হালকা কাজ।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার জনি ট্রেডার্সে কাজ করা নারীদের সঙ্গে কথা হয়। তারা তাদের অধিকার আদায়ের দিন সম্পর্কে নেই কোন ধারণা। তবে দুই একজন জানে আজ মে দিবস তাদের অধিকার আদায়ের দিন। রোকেয়া, খাদিজা, বিলকিস, ফিরোজা, ওহেলা বলেন, আজ অধিকার আদায়ের দিন, অধিকার আদায়ের আন্দোলন করে লাভ কি? প্রতি বছর আসে। তাতে কোন লাভ হয়নি। আমরা নারী অবহেলিত পুরুষদের তুলনায়। একদিন কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবেনা, সেই জন্মের পর যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকে চাতালের কাজ করি। ঘর্মাক্ত শ্রমের আমরা চিরকালই এ কাজ করি। কাজ করলে টাকা পাই।

তারা আরও বলেন, আমাদের কাজ হলো- ধান শুকিয়ে তোলার সময় চাতাল ঝাড়ৃ দেওয়া ৩টাকা মন, ধান ভাঙ্গ ১০০মন ধানে ১৫ কেজি চাল। এতে ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা দিনে আয় হয়। আর ছেলেরা গড়ে ৬শ টাকা আয় করে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও আমরা কাজ করি। যেন সংসার আরো সচ্ছল হয়। স্বামী-স্ত্রী মিলে কাজ করলে টাকা বেশি পাওয়া যায়।

শেরুয়া বটতলা এলাকার চাতাল শ্রমিক আশরাফুর ইসলাম (৫১) জানান, পরিশ্রমে ঘাম ঝরে শরীর থেকে। ভিজে যায় জামা-লুঙ্গি। গামছা দিয়ে মুখ মুছতে হয় বার বার। শরীরের ঘাম শরীরে মিলে যায়। ক্লান্ত তবুও ধান শুকাতে ব্যস্ত চাতাল শ্রমিকরা। “কখনো কখনো শরীর জিরাতে চলে যাই গাছতলায়। এতো শ্রম দিয়ে দিন শেষে আসে মাত্র ৫শ থেকে ৬শ টাকা”

তিনি আরও জানান, সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে এসে ধান সিদ্ধ করা শুরু করি ভোর ৫টা বা ৬টার পর্যন্ত। সকাল থেকে ধান শুকানো আর সন্ধ্যায় ধান ঘরে তোলা ও মাপযোগ করার কাজ করতে হয়। এভাবেই ধান থেকে চাল বাজারজাত হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বিরতিহীন কর্মধারয় নিযুক্ত থাকতে হয় শ্রমিকদের। এই কাজে থাকতে হলে কোনো আপত্তি চলবে না।

চাতাল মালিক জাকারিয়া জুয়েল, জনি ও মাহমুদুল হাসান নাঈম জানান, এই কাজ অনেক কষ্ট করে করতে হয়। এ কাজে শ্রমিকের সংখ্যা কম। প্রত্যেক লেবারকে কাজ করার জন্য অগ্রিম ৭০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিতে হয় লেবারদের। কাজ থেকে চলে গেলে টাকা ফেরত দিতে হয় তাদের। কিন্তু অনেক লেবার তা দেয় না।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com