ফেনীর সোনাগাজীতে ভূমি দস্যুদের ভয়াল থাবায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে একটি নির্মাণাধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরখন্দকার এলাকায় নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা আফসার উদ্দিন পাটোয়ারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ওই চরাঞ্চলের জেলেপাড়ার হতদরিদ্র ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য একমাত্র ভরসা। টিনের ঘরে এতোদিন ক্লাস করলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা সেখানে তিন তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে রাস্তা ও মাঠ ভরাটের কাজ শুরু করলে হঠাৎ করে এক ভূমিদস্যু সেখানে কাজে বাঁধা প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে।এতে ভবন নির্মাণে এক অনিশ্চয়তা ও জটিলতা তৈরি হয় বলে জানায় এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে সেখানে গেলে দেখা যায়, বড় ফেনী নদীর কূল ঘেঁষে বিস্তীর্ণ চরে একটি টিনের চাউনিতে বিদ্যালয়টিতে ২০০ শতাধিক ছোট ছোট শিশু বাচ্চাদের পাঠদান করার ক্লাস রুম। তার সামনেই রয়েছে বিরাট এক পুকুর। টিনের ঘরের পিছনেই ছোট ফেনী নদী। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও আনুষঙ্গিক সুবিধার কথা চিন্তা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ রাস্তা, মাঠ ভরাটসহ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে।
সেখানে গিয়ে দেখা হয় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাস্টার জহিরুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, স্কুলটি আমাদের পূর্ব পুরুষদের সম্পত্তির উপর আমরা পারিবারিকভাবে এই হতদরিদ্র এলাকার মানুষের শিক্ষার প্রসারে নির্মাণ করছি। ইতিমধ্যে ভবন নির্মাণের জন্য আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বিভিন্ন স্তরের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করতে যাচ্ছি কিন্তু হঠাৎ করে এক ভূমিদস্যু তার সন্ত্রাসী বাহিনীসহ এসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বলে এখানে আমার জায়গা আছে আমি এখানে স্কুল নির্মাণ করতে দিবনা। তার লালিত রনি নামে স্থানীয় এক সন্ত্রাসী আমাদের স্কুল নির্মাণে বাধা সৃষ্টি করে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন মজনু জানান, স্কুলটিতে বর্তমানে ২০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়ন করছে।ভবন না থাকায় ক্লাস রুম সংকটে খুব কষ্ট করে বাচ্চাদের ক্লাস করতে হয়। ভবন নির্মাণ হলে আরো অনেক ছাত্রছাত্রী এখানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে। তিনি আরো বলেন, ভবন নির্মাণে জোরপূর্বক কেউ বাঁধা দিলে এতোগুলো ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে এই চরাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার বন্ধ হয়ে যাবে ফলে এই এলাকার আগামী প্রজন্ম অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশেপাশে আর কোন স্কুল না থাকায় আমাদের স্কুলটির ভবন নির্মাণ না হলে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।
ইউপি চেয়ারম্যান উম্মে রুমা বলেন, আমার ইউনিয়নের চরখন্দকার এলাকাটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। এই এলাকার জনসাধারণ খুবই হতদরিদ্র। তাদের শিক্ষা বিস্তারে এই স্কুলটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু ভূমিদস্যু বিপ্লব ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা স্কুল ভবন নির্মাণে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ এই স্কুলটি নির্মাণে এলাকাবাসী ও সকলের নিকট সহযোগিতা কামনা করছি।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর