• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩৬ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ কামরুল হাসান নিরব
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২৪, ১২:১৮ রাত
bd24live style=

অধ্যক্ষকে বহিষ্কারের পরও মাদ্রাসায় উদ্ধারকৃত টাকা ফেরত দেয়নি হানিফ মেম্বার

ছবি: প্রতিনিধি

ফেনী সদর উপজেলার গোবিন্দপুর নূরীয়া হাফেজিয়া ও এতিমখানা মাদ্রাসায় অর্ধকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে অধ্যক্ষ মাওলানা মামুনুর রশিদ মামুনকে দুই মাসের ছুটি শেষে বহিষ্কার করেছে মাদ্রাসা কমিটি। অধ্যক্ষের থেকে ৩৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অর্থ লোপাটের ঘটনায় অধ্যক্ষ বহিষ্কার হলেও এর দায় এড়াতে পারেন না মাদ্রাসার কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলে দাবি স্থানীয়দের। তারা এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সদর উপজেলার গোবিন্দপুর হাজির বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। আবাসিক ১৫০ ও অনাবাসিক ৬৫০জন শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থানীয়দের অনুদানে পরিচালিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। গত ১৭ বছর ধরে একই ব্যক্তি সাধারণ সম্পাদক, আর তার একক সিদ্ধান্তে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ ওরফে হানিফ মেম্বার ও অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ মামুন মাদ্রাসাটি পরিচালনা করেন। সম্প্রতি মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদ নির্মাণ কমিটি অডিট করতে গিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ে।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনামের সঙ্গেই চলছিল। কিছুদিন আগে এলাকার মানুষের অনুদানে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করে। কাজের আয়-ব্যয়ের হিসাবের স্বার্থে তিন সদস্যের একটি অডিট কমিটি করা হয়। তারা অডিট করতে গিয়ে মাদ্রাসা ফান্ডে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার গরমিল ধরা পড়ে। পরে মাদ্রাসা কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। অডিট কমিটি হিসাব অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা অধ্যক্ষ ও সাধারণ সম্পাদকের যোগসাজশে আত্মসাৎ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

এ সময় তিন ধাপে অধ্যক্ষের বাড়ি থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ লাখ টাকা ও ৬ লাখ ৫০ হাজার নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে সহ মোট ৩৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। অডিট কমিটির সদস্য শাহ আলম জানান, প্রতিষ্ঠানটির মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে হিসাব- নিকাশে ৮ লাখ টাকার গরমিল পাওয়া গেলে বিষয়টি সভাপতি নুর উদ্দিন আবসারকে জানানো হলে তিনি আর ও হিসাবনিকাশ করার কথা বলেন। এতে অর্ধকোটি টাকার হিসাবের গরমিল ধরা পড়ে।

তিনি বলেন, অডিট কমিটির কাছে অধ্যক্ষ ও সম্পাদক মসজিদ নির্মাণ ও মাদ্রাসার ক্ষেত্রে যে হিসাব দিয়েছেন তার কোনো রশিদ জমা দিতে পারেননি। যা নিয়ে অডিট কমিটির আপত্তি দেখা দিয়েছে। অডিট কমিটির রিপোর্টে দেখা যায়, অধ্যক্ষ থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ধার করে সেক্রেটারি নিয়ে যান। মাদ্রাসা তহবিল থেকে এ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ, যার কোন হিসাব নেই। এ ছাড়া সেক্রেটারি ৪ লাখ সাত হাজার ৯৯৩ টাকার হিসার দিলেও তার কোনো রশিদ দেখাতে পারেননি।

অধ্যক্ষের থেকে উদ্ধার করা ৩৫ লাখ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সেক্রেটারি মো. হানিফ জানান, উক্ত টাকার ৩০ লাখ মসজিদ নির্মাণে পাওনা দারদের দিয়ে দেন। চার লাখ মুদি দোকানে দেন। যা কমিটির সভাপতি সহ অন্যান্য সদস্যরা জানেন না। মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি নুর উদ্দিন আফছার বলেন, ২০১৭ সালের শুরুর দিকে আমি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এদের মধ্যে আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্ররা রয়েছে। বেশ কিছুসংখ্যক এতিম শিক্ষার্থীও পড়ালেখা করছে।

অর্ধকোটি টাকা লোপাটের বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদক হানিফ মেম্বার টাকাটা উদ্ধার করেছেন এবং তিনি মাদ্রাসা মসজিদের যাবতীয় হিসাব দেখেন। আমি অসুস্থ ছিলাম, তাই এত দিন এ বিষয়ে তেমন কাজ করতে পারিনি। আগামীতে সাধারণ সভা হবে, তখন সব বিষয়ে আলোচনা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, হানিফ মেম্বার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ডালিমের বড় ভাই। তিনি মাদ্রাসার অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত।

নিজের অনিয়ম ঢাকতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে সরিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রায় সময় ব্যক্তিগত কাজে মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা অধ্যক্ষের মাধ্যমে নিজেই ব্যবহার করেন। এর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করেন তারা।

সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, আমরা তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেছি। অনিয়ম খুঁজে পাওয়ায় তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। তবে নিজের টাকা লোপাটের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তার মোবাইল ফোনে কল দিলে ও তিনি সাড়া দেননি।

ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ন রশিদ বলেন, যেহেতু বেসরকারি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, সেহেতু অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষা কর্মকর্তা ও পরিচালনা কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পরামর্শ থাকবে যে, যাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, তদন্ত করে আইনের মাধ্যমে তাদের সাজা নিশ্চিত করা, যেন কেউ এ ধরনের দুর্নীতি করতে না পারে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:



BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]