• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০৮ জুন, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৮ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২ মে, ২০২৪, ০৮:৪৯ সকাল
bd24live style=
শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছরা-প্রাকৃতিক উৎস

কক্সবাজারে পানি ও আবাসস্থল সংকটে বন্যপ্রাণীকূল

ছবি: প্রতিনিধি

বছর দশেক আগেও নানা প্রজাতির বৃহদাকার গাছগাছালিতে ঘন সন্নিবেশিত ছিল উখিয়া-টেকনাফের বনাঞ্চল। সে সময় শুষ্ক মৌসুমেও বনের ছড়া, খাল ও জলাধারে পানি থাকতো। কিন্তু অব্যাহত বন উজাড়, অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ ও শ্যালো দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং অনাবৃষ্টির ফলে পানির স্তর ক্রমে নিচে নামছে।

শুষ্ক মৌসুমে বনের ছড়া ও খাল শুকিয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীর খাবার উপযোগী পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। বনের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় আশঙ্কাজনক হ্রাস পেয়েছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলও। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও খাবারের জোগান না থাকায় লোকালয়ে বেরিয়ে নানা সময়ে মৃত্যুমুখে পড়ছে প্রাণীকুল। কিছু মানুষের খাবারে পরিণত হচ্ছে পাখিগুলো। এ পরিস্থিতিতে উখিয়া-টেকনাফে বনাঞ্চল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। যদিও বরাবরের মতো বনবিভাগের পক্ষ থেকে বন সৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে।

সম্প্রতি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোডেকের এক সেমিনারে পাহাড়ি ছরা বিলুপ্ত হওয়ায় বন্যপ্রাণীর পানি সংকটের তীব্রতার চিত্র তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন।

প্রফেসর ড. মোশাররফ জানান, টেকনাফে শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছরা-প্রাকৃতিক পানির উৎস। এতে ভোগান্তিতে পড়া বন্যপ্রাণী ও পানির উৎস নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে উখিয়া-টেকনাফের একপাশে বঙ্গোপসাগর, অন্যপাশে নাফনদী। মধ্যখানে পাহাড়ি বনাঞ্চল। মিঠাপানির জন্য পাহাড়ের ছড়া, ভূ-গর্ভস্থল ও বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোন সুযোগ নেই। কিন্তু অতিমাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর ক্রমে নিচে নামছে। ফলে বাড়ছে স্যালাইনের মাত্রা।

আর অনাবৃষ্টি ও বন উজাড়ের কারণে বনের ছড়া, ও জলধারগুলো অব্যাহতভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বন্যপ্রাণী তীব্র পানি সংকটে ভুগছে। অনেক প্রাণী ইতিমধ্যে মারা পড়ছে। অনেক প্রাণী অন্যস্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। খাবার পানি, খাদ্য সংকট আর আবাসস্থল হারিয়ে লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ে হাতি, সাপসহ বিভিন্ন পশু-পাখি। শুধু তাই নয়, স্থানীয় অনেক পরিবার পানি সংকটের কারণে এক গ্রাম হতে অন্য গ্রামে বসতি স্থানান্তর করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণ সীমান্ত  জেলার বনাঞ্চল প্রতিনিয়ত দখল হয়ে যাওয়ায় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকুচিত হয়েছে। বন উজাড়ের ফলে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে গাছপালা। পরিবেশ বিপর্যয়ে নষ্ট হচ্ছে বাস্তুসংস্থান। একইভাবে কমতে শুরু করেছে পশুপাখির খাদ্য। পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রভাব, অবাসস্থল, খাদ্য ও পানির সংকটসহ নানা কারণে লোকালয়ে আসছে বন্যপ্রাণী। এদেরকে শত্রু ভেবে লোকজন ধরছে এবং আঘাতে মারছে। মানবসৃষ্ট দুর্যোগে নানান প্রজাতির প্রাণী ও পাখি বিলুপ্ত হওয়ার পাশাপাশি হারাচ্ছে আপন নীড়। এ থেকে উত্তরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

টেকনাফ বাহার ছড়া শিলখালী এলাকার শফিউল আলম বলেন, দুই দশক আগেও শুকনো মৌসুমে বনের ছড়া ও খালে পানি থাকত। এখন পানি দূরে থাক ছড়ার চিহ্নও নেই। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে এমনটা হচ্ছে।

টেকনাফ শামলাপুরে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করা শাহাজাহান বলেন, অব্যাহত বন উজাড় হওয়ায় খাদ্য ও পানি সংকটে নানা সময়ে অজগরসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ে। আমরা অনেক প্রাণী উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছি।

বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা কোডেক’র ন্যাচার এন্ড লাইফ প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. শীতল কুমার নাথ বলেন, টেকনাফ-উখিয়ায় পানি সংকট দুর করতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। এ সংকট শুধু বন্যপ্রাণী নয়, স্থানীয়দের জন্য তীব্রতর হচ্ছে। এজন্য পাহাড় কাটা বন্ধের পাশাপাশি বনায়ন  আর বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তফিজুর রহমান বলেন, ক্রমে পাকা ও আধাপাকা দালান তৈরি হওয়ায় পান ও ব্যবহারে ভূ-গর্ভস্থ পানির চাহিদা বেড়েছে। তাই দিন দিন সুপেয় পানি সংকট তৈরি হচ্ছে। এটি দূর করতে রেইন ওয়েটার হার্ভেস্টিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য।

এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া- টেকনাফকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে উখিয়ার পালংখালীতে ৬০০ একর জমি লিজের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে, বনের ভেতর প্রাকৃতিক ভাবে পানি সংরক্ষণে খাল-ছরা সচল করা জরুরি। 

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয়ে উখিয়া-টেকনাফে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর বনভূমি জীববৈচিত্র্য হারিয়েছে। পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে পাহাড়ের উপর-নিচে সব অংশ থেকেই নির্বিচারে গাছ কেটে নিয়ে যায় গাছ চোরেরা। পাশের গাছ কেটে নেয়ায়, ছরাগুলো সব মারা যাচ্ছে। পাহাড়ের সব অনুষঙ্গ উজ্জীবিত রাখতে পরিকল্পিত ভাবে গাছ লাগানো শুরু করে তা অব্যাহত রয়েছে।

গবেষণার সুপারিশ মতে, পূর্বে জারি থাকা ছড়ার উভয়পাশে ১৫ ফুট পর্যন্ত জায়গায় দ্রুত গাছ লাগানো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বনকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে না এলে প্রকৃতি ও বন রক্ষা কঠিন হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]