
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক ও আবাসিক হলের পাশ ঘেঁষে রয়েছে একাধিক ময়লার স্তূপ। এসব জায়গায় প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় কাগজ, বোতল, পলিথিন ও খাবারের উচ্ছিষ্টসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা। ফলে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে এসব হল ও সড়কগুলোর চারপাশ। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরায় অসুবিধায় পড়েন শিক্ষার্থীরা। দুর্গন্ধে নাক চেপে পার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন জায়গায় ডাস্টবিন স্থাপন করা হলেও সেখান থেকে আবর্জনা ঠিকমতো অপসারণ করা হচ্ছে না। তবে জনবল সংকট থাকায় নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের স্টেট অফিস
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের সামনের রাস্তার পাশেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা। এই হল সংলগ্ন খাবার হোটেল ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর বিভিন্ন আবর্জনা সেখানে ফেলে রাখা হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিন পরিষ্কারের অভাবে ওই জায়গার ডাস্টবিন ভরে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা। এমনকি পাশের ড্রেনে পড়ে থাকা ময়লা তুললেও দিনের পর দিন পাশেই সেগুলো ফেলে রাখা হয়। এতে রাস্তার চারপাশ দুর্গন্ধ ও স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে।
এদিকে জিয়াউর রহমান হলের দক্ষিণ পাশের অবস্থা আরো বেহাল। হলের ডাইনিং ও খাবারের দোকানের প্ল্যাস্টিকের প্লেট, গ্লাস, পচা ভাত, মাছ-মাংসের কাটাসহ খাবারের উচ্ছিষ্ট প্রতিনিয়ত সেখানে ফেলা হচ্ছে। ফলে সেখানে তৈরি হয়েছে বিশাল ময়লার স্তূপ। সেখান থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা ও ক্ষতিকর জীবাণু। দূষিত হচ্ছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। এতে মশা ও দুর্গন্ধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন হলের দক্ষিণ ব্লকের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু হল পুকুরের উত্তর দিকের রাস্তার পাশে, সাদ্দাম হোসেন হলের উত্তর পাশে, জিয়া হল মসজিদের পাশে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। ফলে এসব জায়গা দিয়ে চলাচলের সময় নাক চেপে অথবা মাস্ক ব্যবহার করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এদিকে মফিজ লেকের চারপাশও পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।
বিভিন্ন সময় এসব ময়লা-আবর্জনা অপসারণের জন্য অপরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়। এতে ক্ষতিকর কালো ধোয়ার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। আগুন দেওয়ার ফলে বিভিন্ন সময় গাছপালা পুড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এতে ক্যাম্পাসের নির্মল পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
জিয়া হলের শিক্ষার্থী আবু খায়ের বলেন, আমাদের হলের পেছনে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলানো হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্গন্ধ। ফলে হলের নিচতলার শিক্ষার্থীদের বন্দি হয়েই থাকতে হয়। দুর্গন্ধে রুমের দরজা-জানালাও খোলা যায় না। সবসময় দরজা জানালা আটকিয়ে রাখতে হয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি দেখা যায় না।
ক্যাম্পাসের সবজি বিক্রেতা শুক চাঁদ বলেন, বঙ্গবন্ধু পুকুরের পাশে ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলোর মাছের ময়লা, পচা ভাত ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট ফেলা হয়। ময়লার দুর্গন্ধে সেখানে হাঁটা ও বসে থাকা মুশকিল। তাছাড়া হোটেলের লোকদের নিষেধ করলেও তারা শুনে না।
এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় কিছু আবর্জনা রয়েই যায়। একবার পরিষ্কারের পার দুয়েকদিনের মধ্যে আবার আবর্জনায় স্তূপ হয়ে যায়।’
এস্টেট অফিস প্রধান শামছুল ইসলাম জোহা বলেন, ‘পরিষ্কার করার পর আবার ময়লা হয়ে যায়। এখানকার দোকানিদের বারবার বলার পরেও সতর্ক হয় না। তাছাড়া জনবল সংকটের কারণে পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না।’
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর