• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১৩ মিনিট পূর্বে
মোঃ কামরুল হাসান নিরব
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২০ মে, ২০২৪, ১১:২৯ রাত
bd24live style=

একরাম হত্যাকারীদের বিচার হবে কবে?

ছবি: প্রতিনিধি

ফেনীর বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিষদ চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি অধরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ মে জেলা শহরের বিলাসী সিনেমা হলের সামনে তাঁকে পুড়িয়ে ও গুলি করে হত্যা করে নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায়ে ৩৯ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আদালত।

পরবর্তীতে দণ্ডপ্রাপ্তরা রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলেও তার শুনানি কার্য তালিকায় আসেনি এখনও। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় বছরের পর বছর আটকে রয়েছে ডেথ রেফারেন্সের শুনানিও।

ফলে বিশ্বজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ১০ বছরেও রায় কার্যকর না হওয়ায়  ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে নিহতের স্বজন, সহকর্মী ও দলীয় নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশের মাঝে। 

জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের অ্যাকাডেমির এলাকার বিলাসী সিনেমা হলের সামনে প্রকাশ্যে গাড়ির গতিরোধ করে কুপিয়ে, গুলি করে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করা হয় একরামকে। এরপর ঘটনার রাতেই তার বড় ভাই রেজাউল হক বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ফেনী মডেল থানার তৎকালীন ওসি  আবুল কালাম আজাদ এ মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ আগস্ট ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। 

এরমধ্যে আলোচিত এ মামলায় গ্রেফতারকৃত ১৬ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘটনায় জড়িত ছিল মর্মে নিজেদের জবানবন্দি প্রদান করেন। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৫৬ জন আসামির মধ্যে ৩৯ জনের ফাঁসির আদেশ ও ১৬ জনকে খালাস দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সোহেল নামের এক আসামি রায় ঘোষণার আগেই র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।

বর্তমানে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৯ আসামির মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছেন। বাকী ১৭ জনের মধ্যে ৮ জন আসামি জামিনে গিয়ে পলাতক ও ৯ জন আসামি ঘটনার শুরু থেকেই অধরা। তার হদিস পাচ্ছে না বলে দাবি করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে এদের মাঝে কয়েকজন এরই মধ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন বলেও তথ্য রয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। 

এদিকে বর্তমানে এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন ২২ আসামি। তারা সবাই খালাস চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। এরা হলেন,জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির আদেল, ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী সিফাত, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. আজমির হোসেন রায়হান, মো. শাহজালাল উদ্দিন শিপন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে আজাদ, কাজী শানান মাহমুদ, মীর হোসেন আরিফ ওরফে নাতি আরিফ, আরিফ ওরফে পাঙ্কু আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, মো. সোহান চৌধুরি, জসিম উদ্দিন নয়ন, নিজাম উদ্দিন আবু, আবদুল কাইউম, নুর উদ্দিন মিয়া, তোতা মানিক, মো. সজীব, মামুন, রুবেল, হুমায়ুন ও টিপু।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জামিনে গিয়ে পলাতক ৮ জনের মধ্যে রয়েছে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম-সম্পাদক জাহিদ চৌধুরি, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়লা জেসমিন বড় মনির ছেলে আবিদুল ইসলাম, এমরান হোসেন রাসেল, জাহিদুল হাসেম সৈকত, চৌধুরি মোহাম্মদ নাফিজ উদ্দিন অনিক, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, আরমান হোসেন কাউসার ও জসিম উদ্দিন।

অন্যদিকে এ মামলার শুরু থেকেই অধরা রয়েছেন ৯ জন হত্যাকারী। শুরু থেকেই পুলিশি ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছেন তাঁরা। এরা হলেন, ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, রাহাত মোহাম্মদ এরফান আজাদ, শফিকুর রহমান, একরাম হোসেন, মোসলেহ উদ্দিন আসিফ, মহিউদ্দিন আনিছ, টিটু ও বাবলু।

অপরদিকে মামলাটির রায় প্রদানকালে খালাস পাওয়া ১৬ জন হলেন-বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরি মিনার, পৌর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউল আলম মিস্টার, আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল হোসেন পাটোয়ারী ওরফে টুপি বেলাল, মো. আলমগীর ওরফে আলাউদ্দিন, আবদুর রহমান রউপ, সাইদুল করিম পবন ওরফে পাপন, জাহিদ হোসেন ভূইয়া, ইকবাল হোসেন, মো. শাখাওয়াত হোসেন, শরিফুল ইসলাম পিয়াস, কালা মিয়া, নুরুল আবসার রিপন, মো. ইউনুস ভূইয়া শামীম ওরফে টপ শামীম, মো. মাসুদ, কাদের ও ফারুক।

ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার বর্তমান ওসি মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরি জানান, এ মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ৩/৪ জন আসামির সাজাপরোয়ানা ফেনী মডেল থানায় রয়েছে। বাকী পলাতক আসামিদের পরোয়ানাগুলো তাদের স্থায়ী ঠিকানার সংশ্লিষ্ট থানায় রয়েছে।এসব আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সব সময় সোচ্চার ও সচেষ্ট রয়েছে।কিন্তু  তাঁদের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।এজন্য তারা এখনও অধরা। 

এদিকে ফেনী জেলা জজ আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। রায়ের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও এবার সেই আপিলের শুনানি হয়নি।

এ মামলায় ফেনী আদালতে নিযুক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফেজ আহম্মদ বলেন, ‘মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, জব্দ তালিকা, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি, জেরা ও নিম্ন আদালতের রায় পর্যায়ক্রমে পেপারবুকে সাজানো থাকতে হয়। সেই পেপারবুক প্রস্তুত না হওয়ায় আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়নি।

ফেনী জেলা জজ কোর্টের পিপি  ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাফেজ আহাম্মদ জানান, মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, জব্দ তালিকা, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি, জেরা ও নিম্ন আদালতের রায় পর্যায়ক্রমে পেপারবুকে তৈরি করতে হয়। পেপারবুক প্রকাশ না হওয়ায় আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়নি। কখন শুনানি শুরু হবে তাও বলা যাচ্ছে না।

এদিকে নিহত  একরামের স্বজন ও দলীয় সহকর্মীরা জানান, দেশের আলোচিত প্রায় সব হত্যাকাণ্ডের বিচার বর্তমান সরকারের সময়ে গুরুত্বসহ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কাড়লেন এ মামলার রায় কার্যকরে কালক্ষেপণ  করা হচ্ছে।

নিহত একরামের ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা নিম্ন আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। সরকার দ্রুত এ রায় কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এবং উচ্চ আদালতেও নিম্ন আদালতের রায়ের প্রতিফলন ঘটবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

নিহত একরামের স্ত্রী তাসমিম আক্তার বলেন, ‘রায় কার্যকর ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমি ও আমার সন্তানরা নিরাপদ নই।’তাঁর দাবি এ  রায় কার্যকরে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]