
পর্যটন কেন্দ্র সাজেক হয়ে ব্যক্তিগত গাড়িযোগে খাগড়াছড়ি আসার পথে ৩ পর্যটককে অপহরণের চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। ৩ জনের মধ্যে ১জন ছিলেন গান চালক।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানাধীন বোয়ালখালী বাজার এলাকার রাস্তার উপর এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা হলেন এসএম নাহিদ উজ্জমামান (৩৮), মামুন ফকির (৩৮) ও জোবায়ের আলম (২৮)। তারা প্রত্যেকেই ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, সাজেক থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি যোগে তারা খাগড়াছড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজারস্থ মাছ বাজার এলাকায় পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা তাদের গাড়ির গতিরোধ করে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় তারা অপহৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে ভিকটিমের মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে টাকা দেয়ার জন্য বলে। অপহৃত ব্যক্তিদের একজন আত্মীয় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপারের মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ সুপার অপহৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়ের নিকট হতে ভিকটিমের নাম্বার সংগ্রহ করেন এবং ভিকটিমের নাম্বারে ফোন দেন। ভিকটিমের নাম্বারে ফোন যাওয়ার পর দুষ্কৃতিকারীরা ট্রুকলারে পুলিশ সুপারের নাম্বার থেকে ফোন কলটি এসেছে দেখতে পেয়ে এবং অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ তৎপরতা আঁচ করতে পেরে অপহৃতদের ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেয়ার সময় অপহৃতদের এ বিষয়ে পুলিশকে কোনো কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। অপহৃত ব্যক্তিগণ অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে দ্রুত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে ঘটনার বিস্তারিত অবহিত করেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
পর্যটকদের একজন এস এম নাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, 'আমরা গত ৪দিন আগে সাজেক গিয়ে অবরোধের কারণে আর ফিরতে পারিনি। অবরোধ শেষ হলে আমরা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। পরে দীঘিনালার বোয়ালখালী এলাকায় কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে আমাদের একটি স মিলে নিয়ে যায়। পরে আমাদের বেদম মারধর করে এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। এরপর দরকষাকষি করে তারা ২০ লাখ টাকায় রাজি হয়। টাকার জন্য আত্মীয়স্বজনের সাথে কথা বলাবলি করলে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নাম্বার থেকে আমি কল পাই। পরে পুলিশ সুপার ফোন দিয়েছে জানতে পেরে আমাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেয়েছি।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, 'কিছু দুষ্কৃতকারী ৩জন পর্যটককে অপহরণের চেষ্টা করেছিল। অপহৃতদের আত্মীয় আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের নাম্বারে কল দেয়। পরে অপরাধীরা বিষয়টি বুঝতে পারে এবং অপহৃত ব্যক্তিদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা একটি অপহরণ মামলা নিচ্ছি এবং দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাব। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।'
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর