
নাটোরের গুরুদাসপুরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি বন্দী হয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার। ডুবে গেছে কয়েকশ বিঘা জমির ধান। রবিবার (৬ অক্টোবর) সকালে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি নিয়ে বাণিজ্যনগরী চাঁচকৈড় টু বিলদহর সড়ক টানা পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন এলাকাবাসী। ফলে দুর্ভোগে পড়েন শত শত মানুষ। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের রাবারড্যাম চৌরাস্তা মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে যানচলাচল স্বাভাবিক করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দুর্গাপুর ভিটাপাড়া, সাবগাড়ী ভিটাপাড়া, রাবারড্যাম, মহিষমারিসহ প্রায় ১০টি গ্রামের মাঠে অতিবৃষ্টি এবং বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারি খাল ছিল গত পাঁচবছর পূর্বেও। সেই খাল দিয়েই মাঠের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন হতো পাশের আত্রাই নদীতে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে কৃষি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে ব্যাপক হারে পুকুর খনন করা হয়েছে। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি খাল বন্ধ করেও নিজেদের পুকুর খনন করেছে। খালগুলো বন্ধ হওয়ার কারণে মাঠের পানি বের হতে না পারায় মাঠের ফসল ও বাড়িঘর গুলো পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে যাওয়া ফসলের মাঠে ইরি ও আমন ধান ছিল। পানি বন্দী পরিবারগুলোও পড়েছে বিপাকে। হাটু-কোমড় পানি পেড়িয়ে বাড়ি থেকে বাজার কিংবা শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হচ্ছে। এই দুর্ভোগ থেকে প্রতিকার পেতেই রোববার সকালে সড়ক অবরোধ করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
সাবগাড়ী ভিটাপাড়া গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, ‘আমরা একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বর্ষা এবং বৃষ্টি বেশি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়াও খালগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। নিজেদের স্বার্থ হাছিলের জন্য সরকারি খাল বন্ধ করে পুকুর খনন করেছে। এখন জমে থাকা পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের মাঠের ফসল ডুবে গেছে এবং বাড়ি ঘরে হাঁটু পানি প্রবেশ করেছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক দুর্ভোগে আছি। উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।’
দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক, রায়হান, রউফ দাবি করেন, ‘জলাবদ্ধতার বিষয়ে এর আগে প্রশাসনকে অবগত করা হয়নি। তবে পুকুর খনন বন্ধে একাধিকবার মানববন্ধন করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে কৃষি জমিগুলোতে একের পর এক পুকুর খনন হয়েছে। প্রশাসনও বন্ধ করতে পারেনি। নিজেদের দুর্ভোগ কমাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ পেতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ‘জলাবদ্ধতার বিষয়ে ওই এলাকা থেকে কেউ অবগত করেনি। সড়ক অবরোধের বিষয়ে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীকে বলা হলে তারা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছে। সরেজমিনে গিয়ে জলাবদ্ধতা কীভাবে নিরশন করা যায় তা নিয়ে কর্মপরিকল্পনা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর