
গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তবে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ না হতেই রাজনীতিতে প্রবেশ করাতে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন তিনি। অনেকে প্রশ্ন তোলেন সাকিব কেন রাজনীতিতে যোগ দিলেন? তার উদ্দেশ্য কি?
এ বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ থাকলেও এবার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আসল কারণ জানিয়েছেন সাকিব নিজেই। বুধবার (৯ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই পোস্টের মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্য।
পোস্টে সাকিব লিখেছেন, আমি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়াটা ছিল মূলত আমার জন্মস্থান অর্থাৎ আমার মাগুরার মানুষের উন্নয়নের জন্য সুযোগ পাওয়া।
তিনি আরও লিখেছেন, আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্দিষ্ট কোনো দায়িত্ব ছাড়া নিজের এলাকার উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখাটা একটু কঠিন। আর আমার এই এলাকার উন্নয়ন করতে চাওয়া আমাকে সংসদ সদস্য হতে আগ্রহী করে।
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট দিয়ে লাল বলের ক্রিকেট বিদায় নিতে চান সাকিব। তাই দেশে ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি।
সাকিব লিখেছেন, এই ক্রিকেটকে ধারণ করে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সম্মান অর্জন করার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন -আপনারা । আপনাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন আমাকে আজকের সাকিব আল হাসান বানিয়েছে। আমি যখন দেশের জন্য ক্রিকেটের মাঠে ব্যাট ধরেছি তখন আমার সাথে ব্যাট ধরেছেন আপনারা সবাই। গ্যালারি থেকে আপনাদের চিৎকার, আপনাদের সমর্থন আমাকে ভালো খেলার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ক্রিকেট ম্যাচের দিন চায়ের দোকানে টেলিভিশনের সামনে উপচেপড়া ভিড় -আমাকে শক্তি যুগিয়েছে। আমি জিতলে, আপনারা সবাই জিতেছেন। আমি হেরে গেলে, হেরে গেছেন আপনারা সবাই!
আন্দোলনে মারা যাওয়াদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুরুতেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সে সকল আত্মত্যাগকারী ছাত্রদের, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন। তাদের প্রতি এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা এবং সমবেদনা। যদিও স্বজন হারা একটি পরিবারের ত্যাগকে কোন কিছুর বিনিময়ে পূরণ করা সম্ভব না। সন্তান হারানো কিংবা ভাই হারানোর বেদনা কোন কিছুতেই পূরণযোগ্য নয়।
ছাত্র আন্দোলনে নিজের নীরব ভূমিকার দায় নিজের মাথায় পেতে নিয়ে সাকিব বলেন, এই সংকটকালীন সময়টাতে আমার সরব উপস্থিতি না থাকায় আপনারা যারা ব্যথিত হয়েছেন বা কষ্ট পেয়েছেন তাদের অনুভূতির জায়গাটার প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আপনাদের জায়গায় আমি থাকলে হয়তো এভাবে মনঃক্ষুণ্ন হতাম।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর