• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৯ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:১৪ রাত

ঈদগাঁওতে আ.লীগ নেতা তিন সহোদরের অপকর্মে ভুগছেন লাখো মানুষ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কক্সবাজারের ঈদগাঁওর জালালাবাদ লরাবাকের মরহুম মুহাম্মদ ইদ্রিসের চার ছেলের তিনজন এসএম তারিকুল হাসান (৪৮), মোরশেদুল হাসান (৪৫) ও ইমরুল হাসান রাশেদ (৪০)। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা তিনজনের জীবনাচার ছিল অতি স্বাভাবিক। বড় ভাই অপ্রকৃতিস্থ, ফলে ঘরের হাল ধরতে 'অনুরোধে চাকরি মেলা' সময়ে এলাকার প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে 'ইউনিয়নের এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তির তদবিরে' সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পান মেঝ ছেলে এসএম তারিকুল হাসান। সেজ ছেলে মোরশেদ চাষাবাদ ও ঘর দেখাশোনা এবং ছোটজন ইমরুল রাশেদ পড়ালেখার পাশাপাশি ছিলেন ছাত্রলীগের কর্মী।

কালের পরিক্রমায় ২০১৪ সালে এসে ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের সাথে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান ইমরুল হাসান রাশেদ। এ-পদবীটি পুরো পরিবারের 'আলাদীনের চেরাগ' হয়ে আবির্ভাব হয়।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে আর পেছনে থাকাতে হয়নি রাশেদকে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা ছাত্রলীগে গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে করেছেন কমিটি বাণিজ্য। দায়িত্বপাওয়ার দু'বছরের মাথায় ২০১৬ সালে জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে লড়েন রাশেদ। 'ছাত্রলীগের মান রাখতে' দিনে-দুপুরে জয় ছিনিয়ে নিয়ে হন চেয়ারম্যানও। পালন করেন চেয়ারম্যানির সাথে ছাত্রলীগের দায়িত্বও। প্রায় একবছরে মাথায় বিতর্কের মুখে ছাত্রলীগ ছাড়ার পর ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় আট বছর (২০২৪ এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত) দায়িত্বকালে পরিষদের বিভিন্ন খাতের আয়ের কোটি টাকা 'তছরুপ' করেন রাশেদ। যা নিয়ে দুদকে অভিযোগ হওয়ার পর এখনো তদন্ত চলছে। 

এসবের পাশাপাশি ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদী হতে ইজারাবিহীন বালি উত্তোলন শুরু করেন চেয়ারম্যান রাশেদ। কিন্তু দলের উচ্চ থেকে জেলা পর্যায় সবখানে যোগাযোগ ভালো থাকায় কেউ 'টুঁশব্দও' করতে পারেননি। 

বাড়ির সবার ছোট ভাই সহজ উপায়ে কোটি টাকা আয় করছে দেখে লোভে পড়ে টাকা আয়ে মাঠে নামেন শিক্ষকতায় থাকা মেঝ ভাই তারিকুল হাসান। তাকে দেখে থেমে থাকেননি সেজ ভাই মোরশেদও। চেয়ারম্যান ভাই নদীর যেখানে সেলোমেশিন বসায় তার এপাশে-ওপাশে বাকি দুই ভাইয়ের মেশিন বসেছে। ঈদগাঁও বাজার হতে পোকখালী পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারে অসংখ্য মেশিন বসান তারা। এভাবে জালালাবাদ মনজুর মৌলবির দোকানের পাশে জালালাবাদ-পোকখালী সংযোগ সেতুর নিচে রাত-দিন তিনটি মেশিনে নির্বিচারে বালি তোলায় ২০২১ সালের শুরুতে প্রথম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দুটি গার্ডারসহ ব্রিজটি নদীতে তলিয়ে যায়। এ ব্রিজ দিয়ে পোকখালীর লবণ মাঠ, বাজারসহ সবখানে সহজ পারাপার ছিল দু'পারে লাখো মানুষের। তা বন্ধ হয়ে যায়। 

পরিষদের কোটি টাকা তছরুপ, অনিয়ন্ত্রিত বালি উত্তোলনে ব্রিজ ধসে যাওয়ার পর এলাকায় অসন্তোষ দেখা দিলে নিজেকে রক্ষায় সাবেক হুইপ সাইমুম সরোয়ার কমলকে হাত করে বাগিয়ে নেন নব সৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি। এরপর তিনভাই আরো বপেরোয়া হয়ে জালালাবাদের তিন ফসলি ধঙ্কাবিলের ২৫০ একর জমির 'টপসয়েল' স্কেবেটর দিয়ে দিবা-রাত্রি ডাম্পারে করে ইটভাটা ও মানুষের ভিটা ভরাতে বিক্রি করেন। এভাবে প্রতিটি জমি এক থেকে তিনফুট নীচু করে ফেলায় এখন অনেক জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। কেউ প্রতিবাদ করলে, কিশোর ও অপরাধী গ্যাং দিয়ে হয়রানি করায় ক্ষমতার দাপটের কারণে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। 

পুরো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে যখন-তখন স্কুল হতে বেরিয়ে গেলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা ঠিকই নিয়েছেন মাস্টার তারেক। ভাই সরকারি দলের বড় নেতা হওয়ায় এ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষও তাকে কিছু বলতে পারেননি। স্কুলের পাশে বক্তার মার্কেটে অফিস খুলে তাতে বিচারালয় খুলেন তিনি। ভাইয়ের ক্ষমতায় জমিদখল, টাকা আদায়, মারামারিসহ সব ধরনের বিচার করতেন তিনি।

এসময় উভয়পক্ষ হতে খালি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়ায় অনেককে অন্যায় নির্দেশনাও মানতে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্কুলের ক্লাসে নিয়মিত না হওয়ার বিষয়ে বললেই, ক্রিমিনালির মাধ্যমে স্কুলে নানাভাবে অশান্তি সৃষ্টি করতেন। ৫ আগস্ট দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলে তার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ এবং অপরভাই মোরশেদ দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়েছে। তারেকও কিছুদিন আত্মগোপনে চলে যায়। কিন্তু ছোট ভাই মোরশেদের শ্বশুর বিএনপির উপজেলা নেতা শুক্কুর ও প্রতিবেশী বিএনপি নেতা শওকতের ছত্রছায়ায় আবার স্কুল এবং এলাকায় ফিরে আগের সব অপকর্ম ধারাবাহিক রেখেছেন মাস্টার তারেক। কিন্তু তারা তিনভাইয়ের করা অপকর্মে জালালাবাদ, ঈদগাঁও, পোকখালী ইউনিয়নের লাখো মানুষ এখনো আগের মতোই ভুগছেন। 

এসব কথা উল্লেখ করে জালালাবাদ-পোকখালীর একাধিক ব্যক্তি তারিকুল হাসান তারেক, তার ভাই সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইমরুল হাসান রাশেদ ও মোরশেদের বিচার দাবি করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের কপি, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিজি মাউশি, আঞ্চলিক পরিচালক মাউশিঅ, উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। 

সেখানে অভিযোগকারিরা লিখেন, গত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্কুল ফাঁকি দেয়া, স্কুল কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ না করা, ঈদগাঁও নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন, ধঙ্কাবিলের ২৫০ একর ধানী জমির টপ সয়েল কেটে অবৈধ মাটির ব্যবসা করে কোটি টাকা আয় করলেও ভয়ভীতি দেখিয়ে স্কুলের উপস্থিতি রেকর্ড বইতে স্বাক্ষর করিয়ে নিতেন। আওয়ামীলীগ নেতা ভাইয়ের দাপটে সবাইকে হুমকি-ধমকিতে রাখতেন তিনি। যদিও কোনোদিন ক্লাসে আসলে গল্প-গুজব করে ফোনে ব্যস্ত সময় কাটাতেন। সম্প্রতি ক্লাসের পুরো সময় জুড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত বেঞ্চে বসে পায়ের উপর পা রেখে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে তার অলস সময় কাটানোর একটি ভিড়িও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে ফাঁকি দিতেই, ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের প্রতিটি ক্লাসে ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্তে তিনি তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। 

বর্তমানে নিজের অপকর্ম সচল ও নিজেকে নিরাপদ রাখতে এলাকার ছাত্র সমন্বায়ক দাবি করা অছাত্র একঝাঁক তরুণকে অবৈধ আয়ের টাকায় লালন করছেন মাস্টার তারেক। সাথে হাতে নিয়েছেন ডানদল সমর্থক বেশ কয়েকজন শিক্ষককেও। এভাবে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করতে নানা ভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন তারা। কেউ প্রতিবাদ করলেই তারেক মাস্টার ও তার সিন্ডিকেট টোকাই শ্রেণি দিয়ে লাঞ্ছনা এবং ভাইয়ের শ্বশুর বিএনপি নেতাকে দিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করছেন। 

অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে তার ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। 

ভুক্তভোগীদের দাবি, তারা তিন ভাইয়ের অপকর্মে আমরা এলাকাবাসী ক্ষতির সম্মুখীন ও অসহায়ত্বের সীমা ছিলনা। ধঙ্কাবিলের ধানী জমির ক্ষয়ক্ষতি, বালি উত্তোলনে ব্রিজ ধ্বংস ও ঈদগাঁও নদীর দুই পাশের বেড়ীবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ করায় জনস্বার্থে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হউক। 

জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা ওসমান সরোয়ার ডিপো জানান, তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদের পরিবারের সদস্যদের কারণে ব্রিজটি তলিয়ে গিয়ে এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্রিজটির পশ্চিমের বামাংশের বাঁধটি ভেঙ্গে অর্ধশতাধিক বাড়ি, সড়ক, পুকুর ও নানা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাউবো ভাঙন মেরামতে প্রায় ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে সাব কন্ট্রাক্টে কাজটি নেন চেয়ারম্যান রাশেদ নিজেই। ভাঙন বাঁধতে ব্রিজের মাঝের পিলারে কাছাকাছি এলাকায় ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলে। ব্রিজের ক্ষতির শংকায় স্থানীয়রা নিষেধ করলেও তিনি (চেয়ারম্যান) কর্ণপাত না করায় ইউএনওকে অভিযোগ করা হয়।

এরপর ড্রেজার বসিয়ে ব্রিজের গার্ডারে কিনার থেকেই বালু তোলা হয়েছে। তার সাথে যোগ দেয়, চেয়ারম্যানের দু'সহোদরও। ফলে ২০০৬-০৭ সালের দিকে তৈরী গার্ডার ব্রিজটি কয়েক বছরের মাথায় তলিয়ে স্মৃতি হয়ে গেল। চেয়ারম্যানরা তিন ভাইয়ের লোভের কু-ফল ভোগ করছে নিয়মিত যাতায়াতকারী লাখো মানুষ।  

পোকখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিক আহমেদ বলেন, কিছু মানুষের লোভের কারণে সেতুর মাঝ অংশ ভেঙে যাওয়ায় পোকখালী ও জালালাবাদসহ অন্যান্য এলাকার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক বাসিন্দা দুর্ভোগে পড়েছে। ব্রিজটি দ্রুত পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চলছে। 

দেশের বাইরে থাকায় সেতু ভাঙাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে জানতে জালালাবাদ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইমরুল রাশেদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে, তার ভাই আরেক অভিযুক্ত তারিকুল হাসান তারেক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার একটি সংক্ষুব্ধ পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মূলত তারাই ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে আমাদের হয়রানি করছেন। তারপরও বলবো; তদন্তে এইসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেশের প্রচলিত আইনে যে শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে নেবো। 

 ক্লাস চলাকালীন সময়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওইদিন আমার শরীরে ১০৪ ডিগ্রি জ্বর ছিলো। প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটির আবেদন করলে তিনি ছুটি দেন নি। একারণে শরীরে ঝিমুনিভাব চলে আসায় ক্লাসে বসে একটু আরাম করছিলাম দাবি করেন তিনি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তথ্যের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com