
রাস্তা তৈরিতে নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহারে প্রায় দুই মাস আগে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখে কাজ ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ফলে সড়কটিতে স্কুল পড়ুয়া শিশুসহ পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গ্রামীণ এ রাস্তাটিতে চলাচলে ঘটছে বিঘ্ন। এতে জনগণের চলাচলের সুবিধা না হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র জানায়- বাহাগিলি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভুট্টুর মোড় হতে বাহাগিলি ইউনিয়নের দুলাল মাস্টার বাড়ির সামন পর্যন্ত ৮ শত মিটার সড়ক পাঁকা করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পান নীলফামারীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুজা এন্টার প্রাইজ। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭৪ লাখ টাকা। গত ২০২৪ সালের জুন মাসে কাজটি শুরু করা হয়।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বক্স কাটিং, এজিং ও সাববেজ কাজ করে প্রায় অর্ধেক সড়কে খোয়া বিছানোর কাজ করা হয়েছে। বিছানো খোয়ার মান নিয়ে অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন- সড়কের বক্স কাটিং করার পর ১২ ইঞ্চি বালু ফেলে পানি ছিটিয়ে প্রথমে রোলিং করে মজবুত করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। সড়কটিতে তড়িঘড়ি করে ১০ ইঞ্চি বালু ফেলে দায়সারা কাজ করা হয়েছে। এতে করে সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে।
এছাড়া খোয়ার মান নিম্নমানের হওয়ায় আমরা ভাল মানের খোয়া দিয়ে কাজ করার কথা বললে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অর্ধেক রাস্তায় খোয়া ফেলে পালিয়েছে। এলাকাবাসী আরও জানান- সড়কটির খোয়া বিছানোর সময় ঠিকাদার নিম্নমানের ইটের খোয়া বিছিয়ে সড়কের কাজ করছিল। আমরা বাঁধা দিলে ঠিকাদার আমাদের ভয়ভীতি দেখায়। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেয়। কাজটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় স্কুল পড়ুয়া শিশুসহ পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুঘর্টনার স্বীকার হচ্ছে। আমরা দ্রুত রাস্তাটির কাজ শেষ করার দাবী করছি।
ওই এলাকার নুরন্নবী জানান- স্কুল পড়ুয়া শিশুরা চলাচল করার সময় প্রতিনিয়ত রাস্তায় পড়ে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি বাড়িমধুপুর গ্রামের এক বৃদ্ধা পড়ে গিয়ে দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে।
বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা লিপটন বলেন, শুরু থেকে ঠিকাদার সড়ক নির্মাণে অনিয়ম করে চলছে। সড়কটিতে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করার কারণে এলাকাবাসীসহ সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমানে ঠিকাদার খোয়া ফেলে কাজটি বন্ধ রাখায় জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে।
সড়ক নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মোকছেদুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন- কিছু সমস্যা হয়েছিল। ভাল খোয়ার সাথে একটু খারাপ খোয়া পড়েছে। কাজটি দ্রুত শুরু করা হবে বলেও এ ঠিকাদার বলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মাহামুদুল হাসান জানান- সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য আমরা ঠিকাদারকে তাগাদা দিচ্ছি। আমরা ঠিকাদারের কাছে ভাল মানের কাজ বুঝে নিব।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর