
ভোলার চরফ্যাশনে ৫০ বছরের ভোগদখলীয় বসত ভিটে হাতিয়ে নিতে জেলে পরিবারকে ঘরে আবদ্ধ করে দফায় দফায় হামলা, বসত ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী মো. মানু মাঝিসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এতে হামলায় দুই নারীসহ ৬ জন আহত হয়েছে। এতেই থেমে থাকেনি জবর দখলকারী চক্র। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার চেষ্টা করলে ওই বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পরে স্থানীয়রা জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চাইলে দুলারহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকালে দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে আহতেদের পরিবার সুত্রে জানাগেছে।
আহতরা হলেন- নাজমা বেগম (৩৭), বৃদ্ধা ফুলজান বেগম (৬৫), নাজিম উদ্দিন (৪৫), মো. সবুজ(৩৫) মিরাজ (২৫), মো, নাহিম (১৯)।
শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজিম উদ্দিন জানান, অভিযুক্তরা ও তিনি পরস্পর আত্বীয়। তারা একই বাড়িতে বসবাস করেন। দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামের এসএ ৭৭ ও দিয়ারা ১৩৯০ নং খতিয়ানে বাবা মৃত হাফেজ মাঝির মৃত্যুর পর তিনি এবং তার বৃদ্ধ মা ফুলজান বেগম ও ৫ বোন এবং ৪ ভাই বাবার ওয়ারিশ হিসেবে ওই জমিতে বসত বাড়ি ও ঘর নির্মান করে ভোগ দখলে আছেন।
তার বাবার মৃত্যু পর তাদের অপর ওয়ারিশ চাচাতো মানু মাঝি তাদের পাওনা ২৬ শতাংশ জমি জবর দখল করে রাখেন। এনিয়ে গত ২৩ সনে তাদের জমি ফিরে পেতে চরফ্যাশন সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
কিন্ত তার প্রতিপক্ষ মানু মাঝিরা আদালতের নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করে ওই জমি পরিমাপের জন্য তাদেরকে ডাকেন। তিনি এবং তার অপর ভাইয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে উপস্থিত হলে মামলা তুলে নেয়ার জন্য তারা চাপ দেন।
এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ওই বিরোধের জেরে মানু মাঝির নেতৃত্বে তার ভাই মনির ও কামাল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করেন। তার প্রতিবাদ করলে ওই চক্র সংঘব্ধ হয়ে দ্বিতীয় দফায় তাদের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এসময় তাদের হামলা তার বৃদ্ধা মাসহ ৬ জন আহত হন।
তিনি আরো জানান, প্রতিপক্ষের হামলায় তার পরিবারের ৬ সদস্য আহত হলেও তাদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেন প্রতিপক্ষরা। পরে তাদেরকে একটি বদ্ধ ঘরে দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে স্থানীয়রা জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে দুলারহাট থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে পাঠান।
অভিযুক্ত মো. মানু মাঝি জানান, জমি পরিমাপের জন্য গেলে অপর পক্ষের সাথে তাদের তর্ক হয়। এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। হামলা ভাঙচুরের বিষয় সঠিক নয়।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইতেখার জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ আহতের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর