মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) সংবাদদাতা:- বর্ণাঢ্য আয়োজনে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, শিক্ষক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

তবে প্রতিবছর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার সদর ধর্মঘর (ময়ূরখীল) এলাকার বটমূলে বর্ষবরণের ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিকতা। আর আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় উৎসুক অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া জানান, বর্ষবরণের জন্য বটমূলে নানা সাঁজসজ্জা করতে হয়। আর স্বল্প সময়ের কারণে বটমূলের সৌন্দর্য বর্ধনের সেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া এবছর তীব্র গরম পড়ায় বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় বটমূলে অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার কারণে এবছর বটমূলে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। তবে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা ও উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সকল আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, সকাল ১১টায় উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয় থেকে বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি মানিকছড়ি বাজার প্রদক্ষিণ করে মহামুনি বুদ্ধ মেলাস্থলে গিয়ে শেষ হয়। পরে মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এতে জেলা বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. এনামুল হক এনাম, সাধারণ সম্পাদক মো. মীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান মাস্টার, ১নং মানিকছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেনসহ উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।

এদিকে সকাল থেকে তিন পার্বত্য জেলার সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী ১৪১তম মহামুনি বুদ্ধ মেলায় দর্শানার্থীদের ঢল নামে। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা দেখতে পার্বত্যঞলের পাশাপাশি সমতলের হাজার হাজার দর্শানার্থীদের সমাগম ঘটেছে। মেলায় সব ধরনের বাহারি সব দোকানপাটের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। অনেক আগ্রহের সাথে রকমারি পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে দেখা গেছে দর্শানার্থীদের। তাছাড়া প্রতিবছর তিন পার্বত্য জেলার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ সমতলের প্রায় ২৫-৩০ হাজার পাহাড়ি-বাঙ্গালিসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন মেলা ঘটে এখানে।

কেননা আবহমান কাল ধরে চলে আসা বর্ষবরণ ও পাহাড়ে বৈসাবি উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে নানা রকমের অনুষ্ঠানাদি থাকলেও এ মেলা সবার আগ্রহের কেন্দ্রে। কেননা এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন তৈরি হয়। মেলায় শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী ও বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

মানিকছড়ি থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল। এর বাইরেও বাড়তি গোয়েন্দা নজরদারির ফলে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যার ফলে উৎসব মুখর পরিবেশে দর্শনার্থীরা এবারের মেলা উপভোগ করেছে।

সালাউদ্দিন/সাএ