
এফডিআরের (স্থায়ী আমানত) মতো এবার সঞ্চয়পত্র বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ মিলবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে এই সুবিধা চালু করতে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যবস্থায় সঞ্চয়পত্র হবে জামানতযোগ্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকেই মিলবে ঋণ। ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর।
“বাং লাদেশ প্রতিদিন”-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে সঞ্চয়পত্রকে আরও আকর্ষণীয় করা এবং ঋণ বাজারে লেনদেনযোগ্য উপকরণের পরিধি বাড়ানো। এই উদ্দেশ্যে সঞ্চয়পত্র লেনদেনযোগ্য করার পাশাপাশি, তা জামানত হিসেবে ব্যবহার করে ঋণ নেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বর্তমানে সঞ্চয়পত্র বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া যায় না, কিন্তু এফডিআরের বিপরীতে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। একইভাবে, সঞ্চয়পত্রও ভবিষ্যতে বন্ধকযোগ্য হবে বলে জানা গেছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ প্রক্রিয়ায় সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগকারীদের জন্য তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ পাওয়ার একটি বিকল্প পথ খুলবে এবং একই সঙ্গে তা ঋণ বাজারে তারল্য বাড়াবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “সঞ্চয়পত্র লেনদেনযোগ্য হলে তা ঋণ বাজারে বৈচিত্র্য আনবে। জামানত হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে মানুষ জরুরি প্রয়োজনে সহজেই অর্থ পাবে, বিনিয়োগ আটকে থাকবে না।”
বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর পরিচালিত চারটি প্রধান সঞ্চয়পত্র স্কিম চালু রয়েছে:
এ ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ প্রাইজ বন্ড, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইনভেস্টমেন্ট বন্ড।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭৮ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা, আর পরিশোধ হয়েছে ৯৯ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ফলে নিট বিক্রিতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সঞ্চয়পত্র বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং মধ্যবিত্তদের জন্য সঞ্চয়ের অর্থ আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করবে।
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর