
বর্তমান প্রজন্মের কাছে মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিনের পরিচয়, তিনি একজন রাজনীতিবিদ। তিনি শুধুই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ নন, একসময় দেশের অন্যতম তারকা ক্রীড়াবিদও ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তান দলে খেলেছেন। স্বাধীনতার পরও ঢাকার ফুটবলে মোহামেডানের হয়ে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। ফুটবলার হিসেবে অবসর নেয়ার পর বাফুফে সভাপতিও হয়েছিলেন। এএফসি-ফিফার বিভিন্ন কমিটিতেও ছিলেন তিনি।
ক্রীড়াবিদ থেকে বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হওয়া মেজর হাফিজ উদ্দিনের কাছে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার আগে পরামর্শের জন্য গিয়েছিলেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তখন মেজর হাফিজের উপদেশ না শুনে এখন সাকিব বিপদে পড়েছেন। আজ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর হাফিজ এ কথা জানান।
শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত দেড় মাস বাসা ও হাসপাতালের বাইরে বের হননি মেজর হাফিজ। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের আমন্ত্রণে ক্রীড়াঙ্গনের এক অনুষ্ঠানে আজ হাজির হয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'সাকিব আমার বাসায় এসেছিল। আলোচনার এক পর্যায়ে তাকে উপদেশ দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম যা ই করো, আওয়ামী লীগ করো না। সে উপদেশ না শুনে বিপদে পড়েছে।’
সাকিবকে রাজনীতি ও আওয়ামী লীগে যোগ না দেয়ার যুক্তিও দেখিয়েছিলেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার, ‘জাতীয় দলে খেলা অবস্থায় রাজনীতিতে যোগদান করা আমার মনঃপুত নয়। আমি তাকে বলেছি তোমার অনেক নাম হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে অলরাউন্ডার হয়ে আছো। এখন রাজনীতিতে যেও না। আর গেলে এই দলটি (আওয়ামী লীগ) বেশি দিন আর স্থায়ী নেই। সে আমার কথা শুনে চুপচাপ চলে গেল।’
বর্ষীয়ান ক্রীড়াবিদ ও রাজনীতিবিদের কথা সাকিব শুনেননি। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং সংসদ সদস্য হন। এতে এখন সাকিব বিপদে পড়েছেন। এই সম্পর্কে মেজর হাফিজ বলেন, 'সে যদি আমার কথা শুনত। রাজনীতিতে না যেত তাহলে এখন সে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করত। এখন তো তার বাড়ি আসাই মুশকিল।’
আজকের অনুষ্ঠানে অতিতি হিসেবে ছিলেন তামিম ইকবালও। তাকে উদ্দেশ্য করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ঠিক মতো পরিচালনা করতে পারেনি। ফলে সময়ের আগেই কিছু ফরম্যাট থেকে তাকে সরে আসতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বিভিন্ন ফেডারেশনে এক্সটা কাভার (অযাচিত) লোকজন ঢুকে পড়ে।’
ক্রীড়াঙ্গনে দল নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব বাংলাদেশের অনেক পুরনো। পুরনো স্মৃতি হাতড়ে বলেন, 'স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান দলে এক সময় আমিই ছিলাম বাঙালি খেলোয়াড়। পরবর্তীতে পিন্টু, নুরন্নবীও ছিল। স্বাধীনতার পর মোহামেডান ক্লাবে ভালো খেলেও জাতীয় দলে ডাক পাইনি। কারণ হিসেবে জানা গেল আমার বাবা ছিলেন চিকিৎসক এবং জাসদ করতেন। সেজন্য আমি জাতীয় দলে খেলতে পারেনি।’
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর