
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ঘোষিত নাগরিক সেবামূল্য স্থগিত করেছেন প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ। সোমবার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় তাঁর দপ্তরে নগরের বাসিন্দারা স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপি পড়ে ও নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি তা স্থগিত করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ২০ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নাগরিক সেবার মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর গত ১৫ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এতে স্বাক্ষর করেন। এতে ২৩ টি নাগরিক সেবার বর্তমান মূল্য ও পুনঃনির্ধারিত মূল্য তুলে ধরা হয়। এতে ১৯ টি খাতে মূল্য বাড়ানো হয়। এইক্ষেত্রে পাঁচগুণ টাকা বাড়ানো হয় ১৫ টি খাতে। কোন ধরনের গণশুনানি ছাড়া এভাবে মূল্য বাড়ানোর নজির নেই।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, জানুয়ারি মাসের সিদ্ধান্ত, হঠাৎ করে মে মাসে বাজেটের একমাস আগে জানান দেওয়া হয়। এতোদিন এই সিদ্ধান্ত কেন জানানো হল না। আবার বলা হচ্ছে ১ মে থেকে এটি কার্যকর হবে। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যুগে এভাবে জনস্বার্থ বিরোধী মূল্য তালিকা বৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন লাভবান। এখানে টাকার অভাব নেই। কর্মকর্তা কর্মচারী ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মীরা নিয়মিত বেতন ভাতা পাচ্ছেন। সিটি করপোরেশনে ১৫৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়ন কাজ চলছে। অন্যান্য ফি নগরবাসী দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় জনস্বার্থ বিরোধী পুনঃনির্ধারিত মূল্যতালিকা অবিলম্বে প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি। অন্যথায় নগরবাসীকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি উৎবাতুল বারী আবু, কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, প্রকৌশলী আকবর হোসেন প্রমুখ।
এ সময় উৎবাতুল বারী আবু বলেন , কোন ধরনের গণশুনানি ও জনপ্রতিনিধি ছাড়াই পাঁচগুণ সেবামূল্য বাড়ানো হয়। যাহা তাদের কোনো ইখতিয়ার নাই। এটা মানা যায় না। আমরা প্রশাসক মহোদয় কে সেটি বাতিল করার কথা বলেছি। আমাদের বক্তব্য শুনে তিনি তা স্থগিত করেছেন।
প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেবামূল্য পুনঃনির্ধারণ স্থগিত করা হল। এটা নিয়ে আমরা আবার বসবো। সবার সঙ্গে কথা বলব।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সচিব মোহাম্মদ মামুন স্বাক্ষরিত চিঠিতে নাগরিক সেবার মূল্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ তালিকায় দেখা গেছে, বেকারত্ব সনদ আনতে গেলেও সেবাগ্রহীতাকে গুণতে হবে ১০০ টাকা। যাহা চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে সেটি কার্যকর করার কথা ছিল। হঠাৎ করে কোনো ধরনের গণশুনানী কিংবা আলোচনা ছাড়াই নাগরিক সেবার মূল্য তালিকা বৃদ্ধি করায় কুমিল্লার সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর