
শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে সব সময় শাহরিয়ার আলম সাম্য সামনের সারিতে থাকতেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তাকে নিরাপত্তা দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্যকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন আসিফ মাহমুদ। সেখানে তিনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নিরাপদ জায়গা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।
ফেসবুক পোস্টে আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৯ সালের দিকে ক্যাম্পাসে গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কিংবা শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে আমাদের সাথে যেসব মুখ সবসময় দেখা যেত, সাম্য তাদের একজন।
মশিউর আমিন শুভ আর শাহরিয়ার আলম সৌম্য-এই দুজন সব সময় একসাথে আসতো। প্রথম বর্ষ থেকেই সাম্য ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং অসম্ভব ভদ্র একজন ছেলে। সেই ছোট ভাই সাম্য আজ আর আমাদের মাঝে নেই—এটা মেনে নেওয়া সত্যিই কষ্টকর।
সাম্য হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। তবে শুধু ব্যক্তি নয়—উদ্যান কেন্দ্রিক অপরাধচক্র, মাদক চক্র এবং উদ্যানের অনিরাপদ পরিবেশও এ ঘটনার জন্য সমানভাবে দায়ী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবার কথা ছিল স্বস্তির জায়গা, অথচ অবৈধ দোকান, মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধচক্রের কারণে এটি দীর্ঘদিন যাবৎ আতঙ্কের স্থানে পরিণত হয়েছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ইতোমধ্যে ঢাবি প্রশাসন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী খুব শিগগিরই উদ্যানকে একটি নিরাপদ স্থানে পরিণত করা হবে। আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নিরাপদ একটি জায়গা হিসেবে গড়ে তুলব। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা দুঃখিত সাম্য, তোমাকে নিরাপত্তা দিতে পারিনি। তবে আর কারো সাথে যেন এমন কিছু না ঘটে তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য। হত্যার ঘটনায় সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ ডিএমপির শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
সাম্য হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর রাজাবাজারসহ কয়েকটি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাদারীপুর সদরের এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার থানার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)।
শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর বলেন, তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর