
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা উমনে হুমাইদ একাডেমি এতিমখানায় তিন শিক্ষার্থী মিলে গামছা দিয়ে গলাচিপা খেলতে গিয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শিক্ষার্থী মো: আশরাফুল শেখ (১২) বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার টাউন-নওয়াপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। সে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাফেজিয়ার ছাত্র। এ ঘটনায় অপর দুই শিশু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে ফকিরহাট মডেল থানা পুলিশ।
অপর শিক্ষার্থীরা জানায়, ১২ বছর বয়সী ওই তিন শিক্ষার্থী সহপাঠী ও বন্ধু ছিল। তারা গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দম বন্ধ করে রাখার খেলা (গলাচিপা) খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত বন্ধুকে মেরে ফেলে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো অত্র প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মিরাজুল ইসলাম ইয়াসমিন (১৪) এবং সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. তানভীর বিশ্বাস (১৪)। মিরাজুল পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মিজানুর রহমান খানের ছেলে এবং তানভীর খুলনার বটিয়াঘাটার গাউঘরা গ্রামের রুস্তুম বিশ্বাসের ছেলে।
পুলিশ জানায়. সোমবার (১৯ মে) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ফকিরহাট বালিয়াডাঙ্গা উমনে হুমাইদ একাডেমি এতিমখানার শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম ইয়াসমিন, মো. তানভীর বিশ্বাস ও মো. আশরাফুল শেখ, মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে একটি বাগানে গামছা দিয়ে গলাচিপা খেলতে খেলতে মো. আশরাফুল শেখকে ওই দুই শিক্ষার্থী গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত চাপে দীর্ঘক্ষণ দম বন্ধ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আশরাফুল শেখ মারা গেছে বুধতে পেরে দুই শিক্ষার্থী মরদেহ নিয়ে মাদ্রাসার পিছনে টয়লেটে রেখে দেয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মরদেহ উঁচু দেয়ায়ের উপর দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে দিকে মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ঘটনাটি জানালে সে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাফেজ নাজমুল ইসলামকে জানান। এরপর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ফকিরহাট থানা পুলিশকে অবগতি করে।
এদিকে নিহত শিক্ষার্থীর মা মোসা. ফাতেমা বেগম জানান, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঘটনার দিন সন্ধ্যায় জানান যে, তার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। পরবর্তীতে রাতে জানতে পারেন তার ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক মীর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মরদেহের প্রাথমিক সুরোতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় দুই শিশু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর