• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২২ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫, ১০:৩০ রাত

তালাক দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন যুবক

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর দক্ষিণখানে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে রাস্তায় প্রকাশ্যে শিল্পী বেগম (২৫) নামের এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী মো. তুহিন (৩২)। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা স্বামীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করে। এরপর স্বামী তুহিন মিয়া (৩২) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পারিবারিক কলহ, স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহ, ভরণ-পোষণের অভাব ও ডিভোর্স—এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।

তুহিন মিয়া ও শিল্পী আক্তারের পরিচয় হয় একই বাড়িতে ভাড়া থাকার সুবাদে, পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁদের সাত বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। তবে অভাব-অনটনের সংসারে তুহিন কর্মহীন থাকায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। অন্যদিকে, শিল্পীর ফোনে কথা বলা নিয়ে তুহিন সন্দেহ করত। এই পরিস্থিতিতে শিল্পী মা-বাবার বাড়িতে গিয়ে তুহিনকে ডিভোর্স দেন। সেই খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তুহিন দক্ষিণখানের শাহ কবীর মাজার রোডের চালাবন এলাকায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে প্রকাশ্যেই শিল্পীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেন।

এ ঘটনায় শিল্পীর ছোট ভাই আরিফ হোসেন বাদী হয়ে ওই রাতেই দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর বুধবার (২৮ মে) সকালে পুলিশ তুহিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে পাঠায়। সেখানেই তুহিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার এজাহারে আরিফ হোসেন উল্লেখ করেন, ‘তুহিন সংসারে ঠিকমতো ভরণপোষণ দিত না, উল্টো ঝগড়া করত। কোনো কাজকর্ম করত না। মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চলত। পাওনাদারদের চাপে প্রায় দেড় বছর আগে আমার বোন-ভাগনিকে নিয়ে আমাদের বাসায় চলে আসে। পরে তিন-চার মাস ধরে গার্মেন্টসে চাকরি করত। হত্যার দিন আমার বোন গার্মেন্টস থেকে বের হলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা তুহিন নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে।’

আরিফ হোসেন আরও জানান, ‘আমার বোন তুহিনকে ডিভোর্স দিয়েছে। সেই ডিভোর্সের কাগজ তোলার জন্য আমরা আবেদন করছি। তালাকের কাগজ তুহিনের বাড়ি যাওয়ার পরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমার বোনকে খুন করেছে।’

হত্যাকাণ্ডের আগের দিন শিল্পী আক্তার তাঁর ফেসবুকে স্বামীসহ নিজের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘খারাপ ছিলাম না। পাগলের মতো ভালোবাসছিলাম। কিন্তু ভালো থাকতে দিলি কই। খারাপ তো বানাইতাছস। আমার সাজানো জীবন নষ্ট করলি, ভালোবাসার প্রতিদান দিলি। যদি নষ্ট হয়, তাহলে মনে রাখবি—তুই বেইমান হইতে পারিস, তাহলে আমি সব বরবাদ করতে পারি।’

গ্রেপ্তার হওয়া তুহিন মিয়ার মা লতা বেগম বলেন, ‘অনেক দিন আগে আমার ছেলে আর ছেলের বউ কথা-কাটাকাটি করছিল। পরে ছেলে ওর বউরে বাপের বাড়ি রেখে আসছে। আর শিল্পীর মাকে বলে আসছে ওরে একটু বোঝানোর জন্য। যেন শিল্পী ঝগড়া না করে। কিছুদিন পর আমার ছেলে আসার কইছে, আসে না। তারপর ছেলে তাদের হাতে পায়ে ধরছে, তবু আসে না।’

রাস্তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর যুবক বলছিলেন, ‘মেয়েটা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে’রাস্তায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর যুবক বলছিলেন, ‘মেয়েটা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে’
তুহিনের বাবা মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে ওর বউয়ে নিয়ে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু বউয়ের ভাই ছেলে-পেলে নিয়ে এসে ওকে (ছেলে) মারধর করেছে। গোপনে ঈদের (রোজার ঈদ) আগে বউ আমার ছেলেকে তালাক দিয়েছে। আমরা থাকি এই জায়গায়। কিন্তু এই জায়গায় কোনো কাগজ নাই, কাগজ গেছে আমার দেশে (গ্রামে)। আজকে গ্রাম থেকে ছেলের কাছে ফোন দিয়ে তালাকের কথা বলেছে। তখন ওর মাথা গেছে খারাপ হইয়া। তারপর ছেলে আমারে ফোন দিয়ে বলছে—আব্বা বুধবার নাকি আমার তালাকের দুইটা কাগজ বাড়ি গেছে।’

মজিবুর রহমান আরও অভিযোগ করেন, ‘আমার নাতিনকে দেখতে দিত না। আমাদের দেখলে কাপড় দিয়ে ঢেকে (আড়াল) রাখত। কিছু বলতে গেলেই র‍্যাব-পুলিশ দিয়ে মামলার ভয় দেখাত।’

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর তুহিনকে আদালতে পাঠানো হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে হত্যার কারণ হিসাবে তুহিন বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে বনিবনা নেই, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকে না, সন্তানকে দেখতে দেয় না। আবার শাশুড়িও একদিন তাকে ধরে মারধর করেছিল। তাকে রাস্তাঘাটে দেখলে অপমান করত। এদিকে আবার তালাক দিয়েছে। সব মিলিয়ে মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে তুহিন শিল্পীকে খুন করেছে।’

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com