
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে চুরির অভিযোগে এক যুবককে প্রকাশ্যে খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে চুরির দায় স্বীকার করে ‘আর এমন করবো না’ শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের একজন নেতা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার (১ জুন) তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের সাধেরখলা গ্রামে। অভিযুক্ত যুবকের নাম ইছা মিয়া (৩৫)। তিনি ওই গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, একটি খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় অসহায় কণ্ঠে ইছা মিয়া বলছেন,‘আমার ঘরেও মাল আছে, আইন্যা দেই। একটু পানি খাওয়াও। তোমরা যা কও আমি তাই রাজি। কিন্তু আমারে আর মারো না, অত্যাচার কইরো না।’
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার রাতের কোনো এক সময় গ্রামের হাজী এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন রহিম মিয়ার দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে সন্দেহের ভিত্তিতে ইছা মিয়াকে ধরে আনেন কয়েকজন যুবক। এরপর দোকানের পাশেই খুঁটিতে বেঁধে তাকে মারধর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য মতে, মারধরের একপর্যায়ে ইছা মিয়া চুরির দায় স্বীকার করেন এবং চুরি হওয়া কিছু মালামালও তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে তার পরিবারের কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য রোপন মিয়াসহ কয়েকজন মুরব্বিকে ডেকে এনে গ্রাম্য সালিসে মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রোপন মিয়া বলেন, ইছার বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই চুরির অভিযোগ রয়েছে। এবার হাতেনাতে ধরা পড়েছে। চুরির কথা স্বীকারও করেছে, কিছু মালও বের করেছে। এলাকার লোকজনের মত নিয়ে তাকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে ইছা মিয়ার যুবলীগে থাকা বা না থাকার বিষয়ে সংগঠনের বর্তমান কোনো নেতা স্পষ্ট বক্তব্য দিতে চাননি। দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া বলেন, আমি ২০২০ সালে পদত্যাগ করেছি। এখন কারা আছে, তা জানি না।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন,
ঘটনার বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে চুরির সন্দেহে কাউকে আটক করে মারধর করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর