পঞ্চগড়: পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামাড়া ইউনিয়নে ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন কলেজছাত্রসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকাল দশটার দিকে ফকিরহাট বেংহারি পাড়া গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বেংহারি পাড়া গ্রামের সফিজ উদ্দিনের ছেলে ভ্যানচালক রব্বানী (৩৫), একই গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে শাহিন (৩৮) এবং সফিজুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র জামিদুল ইসলাম (২১)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেংহারি পাড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকোর বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন পাশাপাশি রয়েছে। আজ সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে পল্লী বিদ্যুতের একটি তার ছিঁড়ে নেসকোর লাইনের ওপর পড়লে বিকট শব্দ হয়। খবর পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা হলে স্থানীয়রা unawareness এর কারণে ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করতে যান। এ সময় চারজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

জামিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। শাহিন, রব্বানী ও জয় ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহিন ও রব্বানীকে মৃত ঘোষণা করেন। জয় ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নিহতদের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা পল্লী বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন এবং এর সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার দাবি করেছেন।

ধাক্কামাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম দুলাল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, "নেসকো ও পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতির কারণে তিনটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।"

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পঞ্চগড়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাজহারুল আলম দাবি করেন, এই ঘটনার জন্য তারা দায়ী নন, কারণ সেখানে নেসকোর বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছিল। তিনি জানান, তারা সময়মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান জানান, এই ঘটনায় তিনটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে এবং এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সার্বিক তদন্ত করা হবে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবুল কাশেম জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া তিনজনকে হাসপাতালে আনার আগেই শাহিন ও রব্বানীর মৃত্যু হয়েছে। জয় ইসলাম নামের আহত একজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।