
ঝিনাইদহে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের কোদালের আঘাতে এক কৃষক পিতা নিহত হয়েছে।
সোমবার সকালে সদর উপজেলার শংকরপুর গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত
ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানায়, শংকরপুর গ্রামের কৃষক শাহাদত হোসেন (৬৫) তার ছেলে ফয়সাল
হোসেন (২৫) সাথে নিয়ে গ্রামের মাঠে মরিচের ক্ষেতে কাজ করতে যান। কাজ করার সময়
ফয়সাল আকষ্মিকভাবে কোদাল দিয়ে তার বাবা শাহাদত হোসেনের মাথায় আঘাত করে। এতে
ঘটনাস্থলেই শাহাদত হোসেন মারা যান। পরে মৃত বাবাকে মাঠে রেখে বাড়িতে ফিরে গিয়ে
নিজেই তার মাকে ঘটনা জানান ছেলে ফয়সাল। এসময় স্থানীয়রা ও স্বজনরা মাঠে গিয়ে
শাহাদতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে
ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ফয়সাল ছোট বেলা থেকেই মানসিক
প্রতিবন্ধী ।
সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযুক্ত ফয়সালকে আটক করেছি। তার
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ঝিনাইদহে দোকান দখল করে ব্যবসা, উপেক্ষিত আদালত ও সেনা ক্যাম্পের নির্দেশ
ঝিনাইদহ শহরের শেরে বাংলা সড়কে দোকান হস্তান্তর নিয়ে ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে আদালত
ও সেনাবাহিনীর আদেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ভবনের
বর্তমান মালিক একেএম মাসুদুল আলম লিপনের কাছে দোকানঘর হস্তান্তর করতে দীর্ঘদিন
ধরে তালবাহানা করছেন ভাড়াটিয়া কাজী দাউদ হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একেএম নুরুল আলম তার মালিকানাধীন জমিতে একটি ভবন
নির্মাণ করেন এবং তাতে তিনটি দোকানঘর স্থাপন করে তা ভাড়া দেন কাজী দাউদ
হোসেনকে। সেখানে তিনি ‘জাকির হার্ডওয়ার’ নামে ব্যবসা চালু করেন। ২০০১ সালে
একেএম নুরুল আলমের মৃত্যু হলে তার ছেলে একেএম মাসুদুল আলম লিপন ওয়ারিশ সূত্রে
ভবনটির মালিক হন।
পরবর্তীতে মালিক লিপন দোকানঘর হস্তান্তরের জন্য দাউদ হোসেনকে একাধিকবার অনুরোধ
করেন। কিন্তু তিনি নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অভিযোগে আরও বলা হয়, দাউদ
হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নাম ব্যবহার করে
মালিককে ভয়ভীতি দেখান।
উপায় না দেখে মাসুদুল আলম ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল আদালতের মাধ্যমে একটি উকিল
নোটিশ পাঠান, যা দাউদ হোসেন উপেক্ষা করেন। পরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের
প্রেক্ষাপটে ৫ আগস্ট তিনি স্থানীয় সেনা ক্যাম্প এবং জেলা দোকান মালিক সমিতিকে
লিখিতভাবে বিষয়টি জানান।
সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা, দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং জাকির
হার্ডওয়ারের মালিক দাউদ হোসেনকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়। আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত
হয়, আগামী ১২ জুনের মধ্যে দোকানটি মালিক মাসুদুল আলমের কাছে হস্তান্তর করতে
হবে।
তবে মালিকের দাবি, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও দাউদ হোসেন দোকান হস্তান্তর
করেননি। এ প্রসঙ্গে একেএম মাসুদুল আলম লিপন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কাজী দাউদ ও
তার লোকজন দোকান হস্তান্তরে তালবাহানা করছে। এমনকি সেনা ক্যাম্পের নির্ধারিত
সময়সীমাও উপেক্ষা করেছে। আমি শুধু আমার বৈধ মালিকানা ফিরিয়ে পেতে চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার দাউদ হোসেনের মোবাইল নম্বরে কল করলেও তিনি
সাড়া দেননি। তবে তার ছেলে আজিজুল ইসলাম জানান, “এটা আমাদের বহু বছরের ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান। চাইলেই তো হঠাৎ করে ছেড়ে দেওয়া যায় না।”
জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান খান মিঠু বলেন, “সেনা
ক্যাম্পের কর্মকর্তারা কাগজপত্র যাচাই করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্ত
কাজী দাউদ ভাইয়ের মেনে নেওয়া উচিত। না হলে সেটি সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত অমান্য
করার শামিল হবে।”
শৈলকুপায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০
জন আহত হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার নাকোইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাকোইল গ্রামের
মহিউদ্দিনের সাথে একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে সুরমান মন্ডলের সমর্থকদের
মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। রোববার বিকেলে মহিউদ্দিনের সমর্থক মিঠুর সাথে সুরমান
মন্ডলের সমর্থক বিপুলের কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে সোমবার সকালে উভয়
পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০
জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আহতদের
উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবারো সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায়
পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শৈলকুপা থানার এস আই সম্রাট বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের
মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা সংবাদ শুনে সাথে সাথে সেখানে উপস্থিত হয়ে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর