
শেরপুর: শেরপুরে ডিবি হেফাজতে জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকী ওরফে বাচ্চু মেকারকে হত্যার অভিযোগে শেরপুরের তৎকালীন হুইপ ও মহিলা এমপি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিবির পরিদর্শকসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে শেরপুর সদর সি,আর আমলী আদালতের বিচারক (সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সুলতান মাহমুদ মিলন শুনানি শেষে মামলাটি জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এর আগে গত ১ জুন আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মোহন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল আজিজ সজীব রানা জানান, আদালত একই ঘটনায় ইতিপূর্বে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না, তা জানতে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। থানার প্রতিবেদন আসার পর আদালতের বিচারক ঘটনার বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার, বর্তমানে ডিআইজি মো. আনিছুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিবুল ইসলাম খান, জেলা ডিবি পুলিশের সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক সেকেন্ড অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম, সাবেক এসআই মো. রিয়াদ হোসেন, শহর পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এসআই মো. নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, শেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফাতেমাতুজহুরা শ্যামলী, তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরিফ রেজা ও মো. শুভ রেজা, আনোয়ারুল হাসান উৎপল, চন্দন সাহা, আমিরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, মো. আব্দুল হামিদ, হাজী মোশারফ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা বেগম, যুব মহিলা লীগ নেত্রী মাহবুবা রহমান শিমু, যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম রাজু, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী, মো. শহিদুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, মো. আব্দুল আলিম, আশীষ কুমার সুর, শরিফুর রহমান শরিফ, মাসুদ রানা, মো. সাইদুল ইসলাম সাইদ, মনিরুজ্জামান মিলন তালুকদার, চানু মিয়া, সেতু দত্ত, গোপাল দত্তসহ ৩৪ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তৎকালীন হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও সংরক্ষিত আসনের এমপি ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীর পরিকল্পনা মোতাবেক তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলামের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সজবরখিলা মহল্লার বাড়ি থেকে বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু ওরফে বাচ্চু মেকারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়।
পরদিন ৪ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে আবু সিদ্দিকী বাচ্চুর নিথর দেহ তার বাড়িতে রেখে যায় পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু ডিশ ক্যাবলের ব্যবসার পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তার নামে কোনো মামলা ছিল না। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডিবি হেফাজতে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মোহন সাংবাদিকদের জানান, তার বাবাকে হত্যার পর পুলিশ পাহারায় জানাজা এবং দাফন সম্পন্ন করা হয়। তারা তখন মামলা করতে পারেননি। মামলা না করার জন্য পুলিশ সবসময় তাদের ভয়ভীতি দেখাতো এবং তার তিন ভাইকে বিভিন্ন মামলায় দিয়ে হয়রানি করেছে। তিনি তার বাবার হত্যার বিচার চান।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর