দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রামকে ঘিরে যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ আয়োজিত "ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ভূমি বাতিলের দাবিতে" এক নাগরিক সভায় বক্তারা এই আহ্বান জানান।

সভায় বক্তারা ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ভূমি বাতিলের দাবি জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, "আমরা ইতিহাস ভুলে যাওয়া জাতি। পলাশী যুদ্ধের ইতিহাস, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার ইতিহাস, ফরায়েজী আন্দোলনের ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি।" তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট সমাধানে লড়াই অব্যাহত রাখার কথা বলেন এবং এই বিষয়ে আলোচনা রাজপথে ও সুশীল সমাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, "পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে আলাদা করার জন্য উপজাতি সন্ত্রাসী জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভারত।" তিনি অভিযোগ করেন, সংগঠন দুটি পাহাড়ে আরাকান আর্মির অবাধ বিচরণের সহযোগিতা করছে এবং আদিবাসী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নামে স্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাজী মোঃ বরকত আলী বলেন, "সন্তু লারমার মেয়ে আমেরিকায় বসে ষড়যন্ত্র করছে। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তে ইউএনডিপি, ইউনিসেফের সহায়তায় কিছু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত করেছে। তাদের উদ্দেশ্য পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মল্যান্ড নামে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।"

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, "চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে প্রায় ৯৯০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে সরকার, যা বাংলাদেশের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।" তিনি ভারতকে দেওয়া ৯০০ একর জমি বাতিল করে সেখানে ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন।

বক্তারা বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ১১০ একর জায়গা বাতিলসহ বাংলাদেশে অবস্থানরত ৩৫০টিরও বেশি ভারতীয় কোম্পানির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানান।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট পারভেজ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং প্রভাষক এম. শাজাহান সাজুর সঞ্চালনায় সভায় জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আইনজীবী, ছাত্র প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাঁধন/সিইচা/সাএ