
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনের দশ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচার শুরু হয়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং আওয়ামীপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছে, যা জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছর ১৫ জুলাই শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করে হল থেকে বের করে দেয়। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শিহাব, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয়, রাকিব হাসান ও ফাহিম মোর্শেদসহ কয়েকজন নেতাকর্মী সেদিন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মারধরকারী রাকিব হাসান এখনও ক্যাম্পাসে অবাধে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এছাড়া জিইবিটি বিভাগের শিক্ষার্থী আসমা সাদিয়া সূচির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১৫ জুলাই আবাসিক হলে শিক্ষার্থী নির্যাতনের পরিকল্পনায় দ্বীপ, শিহাব ও হৃদয়কে সহযোগিতা করেন। এমনকি জুলাইয়ে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের দমাতে সূচি দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামিউল আজিম বলেন, জুলাই আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে তৎকালীন ভিসির মদদে ছাত্রলীগ তাঁর ওপর হামলা করে এবং হল ছাড়তে বাধ্য করে। নতুন ভিসি যোগদানের পর প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি নতুন ভিসি আহতদের সঙ্গে দেখাও করেননি।
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের সমর্থন দেওয়ায় টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব বিন মোত্তালিবকে তাঁর বিভাগের শিক্ষার্থীরা বয়কট করলেও তিনি অবাধে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অন্যদিকে, গত ৩ আগস্ট কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও দেয়ালে জুলাইয়ের গ্রাফিতি আঁকলে ওই রাতেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তা মুছে দেয় এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিবির আখ্যা দিয়ে জবাই করার হুমকি দেয়। এই ঘটনারও বিচার হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু বিচারের লক্ষ্যে কয়েকটি ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিষয়ে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় প্রমাণ সরবরাহ করে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর