
বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সদর উপজেলা ছাড়িয়ে অন্যান্য উপজেলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৮৮ জনে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা সদরে ৭৮ জন এবং পাথরঘাটায় ৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে বরগুনা সদর হাসপাতালে ২০৬ জন, পাথরঘাটায় ১০ জন, তালতলীতে ৯ জন, বামনায় ৮ জন, আমতলীতে ৪ জন ও বেতাগীতে ৪ জন ভর্তি আছেন।
এ বছর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জন মারা গেছেন। এছাড়া, গত দুই মাসে জেলার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ধারণক্ষমতার প্রায় চারগুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী নিয়ে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুপ্রিয়া হাওলাদার জানান, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বরগুনা হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ, হাঁটার জায়গাটুকুও নেই। চিকিৎসক ও নার্স সংকটে চিকিৎসা দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদ মুর্শেদ শুভ বলেন, গতকালের তুলনায় আজ রোগীর সংখ্যা আরও বেড়েছে। বন্ধের দিনেও নিয়মিত রাউন্ড দিতে হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট থাকলেও তারা সেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। জনগণের সচেতনতা জরুরি, নইলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, অনেক রোগী আছেন যাদের বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব। কিন্তু আতঙ্কিত হয়ে তারা হাসপাতালে আসছেন, এতে চাপ বাড়ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় ১২ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সকে পদায়ন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসক ও ৫ জন নার্স এরই মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন, বাকিরা এখনো যোগ দেননি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর