
মির্জাপুরে পিকনিকে গিয়ে নৌকা থেকে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া সুজন ফরাজীর (১৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকালে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের মৈশালপাড়া বিল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সুজন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিখোঁজ হয়েছিলেন।
সুজনের মা শাহনাজ বেগম অভিযোগ করেছেন, পাওনা টাকার জন্য তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সুজন তার কাছে ৪ হাজার টাকা চেয়েছিলো। সুজনের ভাষ্য ছিল, টাকা না দিলে নৌকার লোকেরা তাকে মারবে। শাহনাজ বেগম মোবাইল বন্ধক রেখে এবং নিজের কাছে থাকা টাকা মিলিয়ে ৪ হাজার টাকা সুজনকে দেন। এরপর সুজন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। শাহনাজ বেগম আরও বলেন, তিনি শুনেছেন নৌকায় মারামারি হয়েছে এবং তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
নৌকা ভ্রমণে অংশ নেওয়া রাব্বি জানান, সুজন সারাদিন নৌকায় পিকনিক করার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে পালপাড়া এলাকায় নেমে যায়। কিছুক্ষণ পর সুজন ফোন করে আবার নৌকায় আসতে চাইলে তারা মৈশালপাড়া কবরস্থান এলাকা থেকে তাকে নৌকায় তোলেন। রাব্বি জানান, সুজন তার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ করেই সে পানিতে পড়ে যায়। তারা এবং স্থানীয় মাঝিরা রাতভর জাল দিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।
রায়হান নামের আরেকজন যাত্রী জানান, ঘটনার সময় তিনি নৌকার ভিতরে ঘুমিয়ে ছিলেন এবং কিছু দেখেননি। ফারুক নামের আরেকজন যাত্রীও জানান, তিনি নৌকার ভিতরে ছিলেন এবং শুধু সুজনের পানিতে পড়ে যাওয়ার কথা শুনেছেন।
নৌকার সাউন্ড বক্সের মালিক রুবেল জানান, তিনি আকাশ ও ফারুক নামের দুইজনের কাছে বক্স ভাড়া দিয়েছিলেন। তিনি শুধু শুনেছেন একজন যাত্রী পানিতে পড়ে মারা গেছেন, কিন্তু বিস্তারিত কিছু জানেন না।
নৌকাচালক শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তিনি ইঞ্জিনের কাছে ছিলেন। তিনি দেখেননি কিভাবে সুজন পানিতে পড়েছে। তিনি আরও জানান, একজন পানিতে পড়ে যাওয়ার কথা শুনে তিনি নিজে ৫ হাজার টাকা খরচ করে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
সর্বশেষ খবর