
সিরাজগঞ্জ: র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করা সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার নিষিদ্ধ সর্বহারা দলের কয়েকজন সদস্য এলাকায় পুনরায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যমুনা নদীর বালুর ব্যবসা ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। গত দুই মাসে এলাকায় চারটি গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তাদের হাতে অস্ত্র আসার উৎস নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলার চালা সাতরাস্তা এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে মো. বাপ্পি (৪০) ২০২৩ সালের মে মাসে এবং সেনভাঙ্গাবাড়ি উত্তরপাড়ার মৃত আলতাফ সরকারের ছেলে মো. পাষান (৩৭) ২০১৮ সালের মার্চে র্যাব-১২ এর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও অস্ত্র মামলা ছিল। অভিযোগ রয়েছে, এতদিন চুপচাপ থাকলেও সম্প্রতি এই দুই সর্বহারা সদস্যের নেতৃত্বে তাদের সহযোগীরা এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ২৩ ও ২৬ এপ্রিল প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে যমুনা নদীর অভ্যন্তরে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর ১৮ জুন রাতে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে চালা এলাকার মুকুন্দগাতি গ্রামের মোহাম্মদ আলীসহ ৩-৪ জনকে মারধর এবং ভয় দেখানোর জন্য পিস্তল ও শর্টগান থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার সূত্র ধরে জানা যায়, ১৯ জুন রাতে তারা মুকুন্দগাতি পূর্বপাড়ার কাইয়ুম, সহযোগী শাকিল ও ক্ষিদ্রমাটিয়া এলাকার ইব্রাহিমকে মারধর করে এবং বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। বাধা দিতে গেলে হামলাকারীদের ছোড়া শর্টগানের গুলিতে মুকুন্দগাতি গ্রামের মোহাম্মদ ও শফিকুল এবং চালার কাওসার সেলিম আহত হন। এ ঘটনায় ২০ জুন বেলকুচি থানায় কাইয়ুম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
এসব ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসী যেকোনো সময় আরও বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
মামলার বাদী কাইয়ুম প্রামানিক জানান, তিনি যমুনা নদীর বৈধ বালু ব্যবসায়ী। তার ওপর দুইবার গুলিবর্ষণ ও মারধর করা হলেও পুলিশ মামলার কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনাস্থল থেকে চারটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিরা তাকে ও মামলার সাক্ষীসহ আত্মীয়-স্বজনদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং মোবাইলে হুমকি দিচ্ছে। তারা পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকেরিয়া হোসেন জানান, বালু ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারধর, বসতবাড়ি ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষ মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করছে।
অভিযুক্ত মো. বাপ্পি ও পাষানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর