
ইরানে মার্কিন হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম দ্রুতগতিতে বাড়ছে। সোমবার এশিয়ার বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের WTI তেলের দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৭৫.৩১ ডলার এবং ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭৮.৫২ ডলারে পৌঁছায়, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা এবং হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাবনা।
হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ শতাংশ বৈশ্বিক তেল সরবরাহ হয়। ইরানের পার্লামেন্ট এই গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন, তবুও ঘোষণাটিই বিশ্ববাজারে আতঙ্ক তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র একে ‘অর্থনৈতিক আত্মহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে চীনকেও পরিস্থিতি প্রশমনে ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্ববাজারে দামের এই ঊর্ধ্বগতি নিয়ে গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্বাভাস দিয়েছে, যদি হরমুজ প্রণালী এক মাসের জন্য ৫০ শতাংশ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ব্রেন্ট তেলের দাম ৯০ থেকে ১১০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর পুরোপুরি বন্ধ হলে তা ১২০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র তেল সরবরাহ নয়, পরিবহন খরচ, বীমা ও বৈশ্বিক রাজনীতির চাপও দাম বাড়াচ্ছে।
তেলের বাজারের এই অস্থিরতা বৈশ্বিক শেয়ারবাজারেও প্রভাব ফেলছে। এশিয়ার বাজারে সূচক পতন দেখা গেছে এবং বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে নিরাপদ খাতে সরে যাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বৈশ্বিক অর্থনীতি, বিশেষ করে জ্বালানি আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কূটনৈতিকভাবে উত্তেজনা প্রশমন না হলে সামনের দিনগুলোতে তেলের বাজার আরও অস্থির হতে পারে।
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর